দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে আজ (২২ জানুয়ারি) অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল ভগবান রামের মূর্তির। যাবতীয় রীতিনীতি মেনে, রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে সেজে উঠেছে গোটা অযোধ্যা শহর। রাম জন্মভূমিতে, রাম ভক্তদের সমাগম হয়। প্রায় গোটা দেশের মানুষ রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে মগ্ন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে 'রাম সিয়া রাম...' কিংবা রামলালার নানা গান, বাণী, 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি।
অযোধ্যায় যেন তারকাদের সমাগম। কিন্তু সেখানে যাননি অভিনেতা- বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তবে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিলেন তিনি। একটি ভিডিওবার্তায় মিঠুন বলেন, "আজকের দিনটা সমস্ত ভারতবাসীর জন্য এবং যারা ভারতের বাইরেও আছে তাদের জন্য মাহাত্ম্যপূর্ণ দিন। যারা সনাতন ধর্মকে মানেন, তাদের জন্য একটা বিশেষ দিন। দেখছি, শুনছি, কত লোক কত কথা বলছেন। ভগবান রামের অপমান করছেন। করুন, যা ইচ্ছে তাই বলুন! কিন্তু মনে রাখবেন, মর্যাদা পুরুষোত্তম হাজার হাজার বছর আগেও ছিলেন, এখনও আছেন এবং কালকেও থাকবেন। আমরা থাকব না। তাই ভেবে চিন্তে কথা বলুন।"
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত মিঠুন চক্রবর্তীর মুম্বইয়ের বাসভবনে যেতেই রাজ্য রাজনীতিতে জোর আলোচনা শুরু হয়েছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, এবার কি মিঠুনকে বিজেপি শিবিরে দেখা যাবে? অবশেষে দীর্ঘ জল্পনার পর ২০২১ সালের ৭ মার্চ, ব্রিগেড সমাবেশে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেন মিঠুন চক্রবর্তী। মঞ্চে ডিস্কো ডান্সারের মুখে শোনা যায়, "আমি জানি আপনারা সকলে চাইছেন আমার মুখে,'মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে' ডায়লগ শোনার জন্যে। তবে আমি যখন ক্যাম্পেইন করব, আপনারা এই কথাটা মনে রাখবেন। এত বড় বড় লিডাররা এখানে রয়েছেন। তাঁদের সকলের কথা মিলিয়ে আমি একটাই কথা বলবো, আপনারা মনে রাখবেন 'আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়া নই। আমি জাত গোখরো, এক ছোবলে ছবি। আমি মিঠুন চক্রবর্তী। আমি যা বলি, আমি তাই করি!"
বিজেপি-তে যোগদানের পরে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেন অভিনেতাকে। একুশের নির্বাচনে মিঠুন ছিলেন বঙ্গ বিজেপির তারকা প্রচারক। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই সিআইএসএফ ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হয় তাঁকে। সশস্ত্র পুলিশের ১১ কমান্ডো এই ধরণের সুরক্ষায় মোতায়েন করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় পদ্ম শিবিরের হয়ে সরাসরি কথা বলতে দেখা যায় সকলের প্রিয় মহাগুরুকে। রাম মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সশরীরে না উপস্থিত থাকলেও, রামের হয়ে সকলকে বার্তা দিতে ভোলেননি 'ডিস্কো ডান্সার'।
প্রসঙ্গত, ২২ জানুয়ারি, রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর, ১১ দিনের সংযমের বিশেষ আচার অনুষ্ঠান শেষ করেন নরেন্দ্র মোদী। নির্মোহী আখড়ার স্বামী গোবিন্দ গিরিজি মহারাজ, প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে সহায়তা করেন। রাজস্থান থেকে আনা পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে এই মন্দির। বিশেষ কারণে রামলালার জন্য শ্যামবর্ণের মূর্তি বাছা হয়েছে। যাতে হাজার বছর অক্ষত থাকে, এজন্যে কোনও সিমেন্ট ও রডের ব্যবহার করা হয়নি।