Mohan Bhagwat: 'হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই,' বাংলা-বিহার ভোটে BJP-র স্ট্র্যাটেজিতে বদল চান ভাগবত?

BJP-কে ফের পরোক্ষে বড় বার্তা দিলেন মোহন ভাগবত। তিনি উল্লেখ করলেন, হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতায় থাকার কোনও সম্পর্ক নেই। বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের আগে RSS প্রধানের এই বার্তা কি তবে BJP-কে নিজেদের সাম্প্রদায়িক স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তনের ইঙ্গিত?

Advertisement
 'হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নেই,' বাংলা-বিহার ভোটে BJP-র স্ট্র্যাটেজিতে  বদল চান ভাগবত?
হাইলাইটস
  • 'হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই'
  • মোহন ভাগবতের মন্তব্যে জোর চর্চা
  • BJP-কে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তনের ইঙ্গিত?

গেরুয়া শিবিরের একাংশ যখন ভারতকে 'হিন্দুরাষ্ট্র' হিসেবে দেখতে আগ্রহী তখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবতের এক মন্তব্য চর্চার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার RSS প্রধান বলেন, 'হিন্দুরাষ্ট্র শব্দটির সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই।' এদিকে বিরোধীদের লাগাতার অভিযোগ, BJP সরকারে টিকে থাকার জন্য হিন্দু আবেগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে চলেছে নিরন্তর। সেই প্রেক্ষিতে মোহন ভাগবতের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে RSS প্রধানের এই বার্তা কি তবে BJP-কে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করার ইঙ্গিত দিল? 

যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেন, একাধিক মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও BJP এবং RSS একটি বিষয়ে একই বিন্দুতে চলে, তা হল হিন্দুত্ববাদ। ফলে মোহন ভাগবতের এহেন মন্তব্য কেবলমাত্র RSS-এর বিচারধারাই ব্যক্ত করল না, বরং BJP-কে সঠিক দিশাও বেছে নেওয়ার নির্দেশও দিল। তবে প্রশ্ন উঠছে সঙ্ঘ প্রধান আচমকা এমন মন্তব্য করলেন কেন? তাহলে কি তিনি সোজাসুজি BJP নেতাদের সতর্ক করলেন?

বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ তোলা হয়, BJP সাম্প্রদায়িক এবং বহুত্ববাদকে অস্বীকার করে চলে। জাত-পাতের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলা হয় কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে তৃতীয়বার গঠিত হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। একাধিক রাজ্যেও ক্ষমতাসীন BJP। এরই মাঝে হিন্দুরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই বলে সঙ্ঘ প্রধান ঠিক কী বোঝাতে চাইলেন, তা নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। তবে কি সঙ্ঘ এবার BJP-কে হিন্দুরাষ্ট্রের অ্যাজেন্ডা নিয়ে কিছুটা নমনীয় ভাব দেখানোর পরামর্শ দিচ্ছে? প্রশ্ন উঠছে বিস্তর। 

RSS নিজের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই হিন্দুরাষ্ট্রের কথা বলে এসেছে। গোলওয়ালকর, যাঁকে গুরুজি বলা হত, তিনি বলেছিলেন, 'ভারতের আত্মা হিন্দু এবং এখানে সংস্কৃতির সঙ্গে অতপ্রোত ভাবে জড়িত হিন্দুত্ববাদ।' সঙ্ঘ শুরু থেকেই উল্লেখ করেছে, হিন্দু শব্দটি কেবলমাত্র ধার্মিক দিক থেকে উচ্চারিত হয় না। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ভারতের সভ্যতা, পরম্পরা, জীবনশৈলী এবং সামাজিক মূল্যবোধ। এর পরও RSS সর্বদা বলে থাকে, মুসলিম, খ্রিস্টান, পারসি বা অন্য ধর্মের মানুষও হিন্দুদের মতোই এই রাষ্ট্রের অংশ। 

Advertisement

RSS কখনওই সরাসরি রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে না। ফলে মোহন ভাগবতের সাম্প্রতিক মন্তব্য সেই বিষয়টিকেই স্মরণ করিয়ে দেওয়া বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তিনি এ-ও স্মরণ করিয়েছেন, সঙ্ঘের আসল উদ্দেশ্য সমাজ নির্মাণ, শিক্ষা, সেবা এবং সাংস্কৃতিক কাজকর্মে অবদান রাখা। ফলে অনেকেই মনে করছেন RSS প্রধানের বক্তব্যে নতুন কিছু নেই। তিনি আগেও উল্লেখ করেছিলেন, RSS-এর উদ্দেশ্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা নয় বরং সমাজকে এমন ভাবে গঠন করা যেখানে নৈতিকতা, একাত্ববোধ থাকবে। তবে তাঁর মন্তব্য করার সময় নিয়েই মূলত চর্চা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, মোহন ভাগবত BJP-র জন্য কোনও সীমারেখা টেনে দিতে চেয়েছেন। একইসঙ্গে বার্তা দিতে চেয়েছেন সংখ্যালঘুদেরও। 

ভারতে হিন্দুরাষ্ট্রের দাবি উঠলেই মুসলিমদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিপক্ষ শিবির সেটিকেই ইস্যু বানিয়ে ফেলে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সে কারণেই কংগ্রেস নেতারা BJP-র বদলে RSS-এর বিরোধিতা বেশি করেন। 

আসন্ন বিহার এবং বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে ডেমোগ্রাফি চেঞ্জ এবং ভোটার তালিকা রিভিশনের মতো বিষয়গুলি নিয়ে সরব হয়েছে BJP। অনুপ্রবেশ নিয়েও বারবার সরব হচ্ছেন শীর্ষ নেতারা। অনুমান করা হচ্ছে, RSS প্রধানের এই বার্তা দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে BJP-কে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

 

POST A COMMENT
Advertisement