বর্ষার তাণ্ডব অব্যাহত থাকায় বুধবার সন্ধে থেকে দেশের ৭টি রাজ্যে বৃষ্টি সংক্রান্ত ঘটনায় ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে মেঘ ভাঙা বৃষ্টির দুর্যোগে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডে ১০ জন, হিমাচল প্রদেশে ৪ জন, দিল্লিতে ৫ জন, উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় ২ জন, হরিয়ানার গুরুগ্রামে ৩ জন, রাজস্থানের জয়পুরে ৩ জন এবং বিহারে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরসঙ্গে বৃষ্টি-সম্পর্কিত ঘটনার কারণে দেশব্যাপী মৃতের সংখ্যা ২৮৩ তে গিয়ে পৌঁছেছে।
কেরালার ওয়েনাড সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে ২৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কেরালার ওয়েনাডের মেপ্পাদির কাছে অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে তিনটি বিশাল ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। টানা তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত থাকায় আরও শতাধিক নিখোঁজ রয়েছেন।
দিল্লি-এনসিআর এলাকায় রেকর্ড এক দিনের বৃষ্টিপাতে জলমগ্ন হয়েছে। রাস্তা-ঘাট, বাড়িঘর, অফিস সবই জলে ডুবে গেছে। বহু মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। দিল্লি সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং স্থানীয় প্রশাসন।
উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশে তুমুল বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকাগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু রাস্তা ধসে গেছে, সেতু ভেঙে পড়েছে, এবং অনেক গ্রাম সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উদ্ধারকাজে নিযুক্ত সেনা, পুলিশ এবং এনডিআরএফ-এর সদস্যরা নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ করছেন। এছাড়াও, স্থানীয় প্রশাসন জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছে এবং নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহারসহ অন্যান্য রাজ্যেও বৃষ্টিপাতের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। বেশ কয়েকটি গ্রামে বন্যার জল ঢুকে গেছে এবং মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ এবং পুনর্বাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতির এই তাণ্ডবে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা উদ্বেগজনক। প্রশাসন এবং উদ্ধারকর্মীরা দিনরাত কাজ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।