কালীমূর্তি (বাঁ দিকে), মাদার মেরি (ডান দিকে)
শ্মশানকালীর বিগ্রহ বদলে গেল মাদার মেরিতে! মুম্বইয়ের একটি মন্দিরে এমন অদ্ভূত ঘটনা ঘিরে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে। বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই মন্দিরের পুরোহিতকে।
ঘটনাটি মুম্বইয়ের চেম্বুর এলাকার আনিক গ্রামের। শ্মশানের মাঠে অবস্থিত একটি মন্দিরের কালীমূর্তি ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ওই মন্দিরের একটি দেবীমূর্তির ছবি। যেখানে দেখা গিয়েছে, সোনালী কাপড়ে সুসজ্জিত দেবীর বিগ্রহের মাথায় রয়েছে মুকুট। যাতে রয়েছে ক্রুশ। মূর্তির গায়ের রং নীল বা কালো নয়। যা চিরাচরিত ভাবে কালীমূর্তির হয়ে থাকে। বরং ধবধবে সাদা। মূর্তির কোলে রয়েছে আরও একটি ছোট বিগ্রহ। যা আদতে শিশু যিশু বলে দাবি করছেন স্থানীয় মানুষজন। অভিযোগ, ওই মন্দিরে দেবী কালীর যে বেদি ছিল, সেটিও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নয়া বেদিতে রাখা হয়েছে ভিন ধরনের এই দেবী মূর্তি। যার সাজসজ্জা মাদার মেরির ধাঁচে। যদিও কালীর মতোই জিভ বের করে রয়েছেন মাদার মেরি। অলোকসজ্জাও পাল্টে ফেলা হয়েছে মন্দিরের।
এই নয়া মূর্তির ছবি ভাইরাল হতেই তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির মধ্যে। পরিস্থিতি উত্তেজিত হয়ে ওঠে মন্দির চত্বরে। পুরোহিতকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রেরও অভিযোগ আনা হয়। পরিস্থিতি বেগতিক ঠেকলে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। ফিরিয়ে আনা হয় আসল কালীমূর্তিটি। পুরোহিতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
পুরোহিত জানান, মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়েছেন তিনি। স্বপ্নে দেবীই তাঁকে সাজসজ্জা বদলের নির্দেশ দেন। মাদার মেরি হিসেবে সাজিয়ে তুলতে বলেন দেবী। সেই স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী, কালীর বিগ্রহ বগলে ফেলা হয় মাদার মেরিতে।
তবে পুরোহিতের এই যুক্তি মানতে নারাজ বিক্ষোভকারীরা। কালীমূর্তি বদলে তাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ। এর নেপথ্যে কোনও বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও মনে করছেন তারা। পুরোহিতকে দিয়ে কেউ বাধ্য় করেছে ওই ধরনের মূর্তি তৈরি করতে।
এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে পুরোহিতকে। তিনি একা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন না এর নেপথ্যে কেউ রয়েছে,তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২৯৯ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানা এবং ধর্মস্থলের ক্ষতিসাধনের ধারায়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দলের দাবি, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বড় ষড়যন্ত্র। দোষীকে চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি তুলেছে তারা।