উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে এক চাঞ্চল্যকর ও ঘটনা সামনে এসেছে। স্ত্রীর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন এক যুবক। জেলা প্রশাসনের কাছে সরাসরি স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পাশাপাশি, ব্যানার-পোস্টার লাগিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানালেন তিনি।
কী অভিযোগ?
গান্ধীনগর কলোনির বাসিন্দা সুমিত সাইনি নামে বছর ২৮-এর ওই যুবক জানান, ২০২৪ সালের ১ জুলাই কুকদা গ্রামের পিঙ্কি নামে এক মহিলার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরদিনই পিঙ্কি জানান যে বিয়েটি তার সম্মতিতে হয়নি এবং তিনি অন্য একজনকে ভালোবাসেন। সুমিতের দাবি, সেখান থেকেই শুরু হয় মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন।
স্ত্রীর ‘গালিগালাজ ও হুমকি’, অভিযোগ স্বামীর
সুমিত জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্ত্রী প্রতিদিন ঝগড়া করতেন, গালিগালাজ করতেন, এমনকি শারীরিক নিগ্রহও করতেন। গত ছয় মাস ধরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে রয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে স্ত্রী একাধিকবার ফোনে হুমকি দেন এবং সুমিতের বাড়িতে লোক পাঠিয়ে তাকে মারধর করার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।
বয়স গোপন, টাকার অঙ্কে মীমাংসার চেষ্টা
সুমিতের আরও অভিযোগ, বিয়ের আগে তার স্ত্রীর প্রকৃত বয়স গোপন করা হয়েছিল। তার বয়স এখন ২৭, কিন্তু স্ত্রীর বয়স ৩৫। বিয়ের পর পারিবারিক অশান্তি এতটাই বেড়ে যায় যে, তার বাবা পারিবারিক জমি বিক্রি করে বিয়েতে খরচ হওয়া ৫ লক্ষ টাকার পাশাপাশি স্ত্রীর হাতে নগদ ৩ লক্ষ টাকা তুলে দেন শান্তির জন্য। তবুও নির্যাতন বন্ধ হয়নি বলে দাবি সুমিতের।
আইনি পদক্ষেপেও মিলল না সুরাহা
সুমিত জানান, তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য আদালতে ৯ নম্বর ধারায় মামলা করেছিলেন, কিন্তু তার বদলে স্ত্রী ও তার পরিবার সুমিত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে। ফলে মানসিকভাবে চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
জীবন নিয়ে বিতৃষ্ণ, প্রশাসনের কাছে শেষ আরজি
সোমবার সুমিত মুজাফফরনগর জেলা কালেক্টরেট চত্বরে পৌঁছে একটি বিশাল ব্যানার হাতে দাঁড়ান। সেখানে স্ত্রীর ছবি দিয়ে লেখা ছিল— 'একজন দরিদ্র যুবকের আবেদন: আমাকে ইচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিন।'
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর তিনি জানান, 'আমি আর বাঁচতে চাই না। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং জেলাশাসকের কাছে আমার আবেদন, আমাকে মরার অনুমতি দিন।'
ঘটনার তদন্ত শুরু প্রশাসনের
এই ঘটনার জেরে মুজাফফরনগর জেলাজুড়ে আলোড়ন পড়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হতে পারে।