গুয়াহাটির দাখিংগাঁও এলাকায় প্রাণ হারালেন পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র সামিউল হক। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত অসমের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নন্দিনী কাশ্যপ, যাঁকে প্রায় এক সপ্তাহের তদন্তের পর অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৪ জুলাই গভীর রাতে সামিউল হক তাঁর কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি নলবাড়ি পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র এবং গুয়াহাটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে আংশিক সময় কর্মরত ছিলেন। রাত প্রায় ৩টে নাগাদ, দাখিংগাঁও এলাকায় তাঁকে সজোরে ধাক্কা মারে একটি স্করপিও গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, গাড়িটি ধাক্কা মেরে একবারও না থেমে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
গুরুতর জখম অবস্থায় সামিউলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসকদের বহু চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি। তাঁর মাথায় গভীর আঘাত ও একাধিক অঙ্গের ভাঙচুর ছিল। মৃত্যুর পরে ছাত্রের পরিবার ও প্রতিবেশীরা অভিনেত্রী নন্দিনী কাশ্যপের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলেন। তাঁদের দাবি, প্রথমে অভিনেত্রী পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তিনি আর কোনও খোঁজখবর নেননি।
গুয়াহাটি পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে এবং সন্দেহভাজন স্করপিও গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে অবশেষে বুধবার গভীর রাতে অভিনেত্রী নন্দিনী কাশ্যপকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হিট অ্যান্ড রান এবং অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ।
তবে অভিনেত্রী এই অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তিনি ঘটনাটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। এদিকে, সামিউলের পরিবার সম্পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তাঁদের মতে, কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আইনের ঊর্ধ্বে হতে পারেন না। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও জনমত তৈরি হয়েছে নন্দিনী কাশ্যপের বিরুদ্ধে।
তদন্ত চলাকালীন পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ ও ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্ট বিচার করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, অসমে সেলিব্রিটি স্ট্যাটাস কি আইনি প্রক্রিয়ার পথে অন্তরায় হবে, নাকি ন্যায়বিচার পাবে সামিউলের পরিবার?