২৭ অগাস্ট অর্থাৎ বুধবার থেকেই ভারতের উপর কার্যকর হতে চলেছে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতকে নোটিশ দিয়ে স্মরণ করিয়েছে আমেরিকা। 'বন্ধু' ট্রাম্পের এই শুল্কবাণ নিয়ে এবার মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদী। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে তাঁর ঘোষণা, 'আমাদের উপর চাপ বাড়তে পারে। কিন্তু আমরা তা মোকাবিলা করব।'
বিশেষজ্ঞ মহলের অনুমান, বাড়তি এই ২৫ শতাংশ মার্কিন শুল্কের ঠেলায় ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে এই প্রভাবের জন্যও কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন নমো। তাঁর মতে, '৬০-৬৫ বছর ধরে ভারত শাসনকারী দল আমদানি কেলেঙ্কারি করেছে। আর সে কারণেই আজ আমাদের দেশ অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।' গুজরাটের আহমেদাবাদে একটি সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী আরও বলেন, 'তাই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার মোকাবিলা করার জন্য শক্তিবৃদ্ধি করব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়েছিলাম। সেই সংকল্পের পথে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছি। দেশও শক্তিশালী হয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মোদীর কাছে কৃষক, গবাদি পশুপালক এবং ক্ষুদ্র শিল্পের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়ে কোনও আপোস করা হবে না।' তাঁর আবেদন, 'আমাদের সকলের কেবলমাত্র ভারতে তৈরি পণ্য কেনার অঙ্গীকার করতে হবে। ব্যবসায়ীদের উচিত তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে একটি বড় বোর্ড লাগানো। যেখানে লেখা থাকবে, কেবল স্বদেশী পণ্য বিক্রি হয়।'
সাম্প্রতিককালের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ট্রাম্পের জারি করা অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ৪ হাজার কোটি ডলার অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকার ডলার ধাক্কা খাবে। ফলে অনুমান করা হচ্ছে শুল্ক জরিমানার এই হুঁশিয়ারি এবং আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে নরেন্দ্র মোদীর এই বার্তা কিছুটা হলেও ক্ষতে প্রলেপের কাজ করতে পারে।
এই নতুন শুল্ক ২৭ অগাস্ট রাত ১২টা ০১ মিনিট থেকে কার্যকর হবে, ফের একবার ঘোষণা করেছে ট্রাম্প সরকার। এই অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক ১ অগাস্ট, ২০২৫ থেকে আরোপিত ২৫% পারস্পরিক শুল্কের উপর চাপবে। যার ফলে ভারত থেকে আমদানি করা অনেক পণ্যের উপর মোট শুল্ক ৫০% হবে। টেক্সটাইল, রত্ন ও অলংকার, চামড়া, সামুদ্রিক পণ্য, রাসায়নিক এবং অটো যন্ত্রাংশের মতো ক্ষেত্রগুলি এর ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে বলে আশঙ্কা। তবে, ওষুধ, সেমিকন্ডাক্টর এবং জ্বালানি সম্পদের মতো কিছু ক্ষেত্র শুল্কমুক্ত।
এই আবহে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'আজ আমরা সমগ্র বিশ্বে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতার নীতি দেখতে পাচ্ছি। গান্ধীর ভূমি থেকে, আমি দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, মোদীর কাছে আপনাদের স্বার্থই সর্বাগ্রে। আমার সরকার কখনও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, পশুপালক বা কৃষকদের কোনও ক্ষতি করতে দেবে না।'