মণিপুর নিয়ে বড় খবর। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সরকার বড়সড় ধাক্কা খেল। NDA-র জোটসঙ্গী 'কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স' সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করল। রবিবার সন্ধেবেলা এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলের তরফে। গত মে মাস থেকে মণিপুর অশান্ত। সেই হিংসার পর কেটে গেছে ৩ মাস। তারপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার মধ্যেই সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল 'কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স'।
মণিপুর সরকারে 'কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স'-এর দুজন বিধায়ক ছিলেন। যে দুই কেপিএ বিধায়ক বীরেন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন তাঁরা হলেন কিমনিও হ্যাংশিং (সকুল) এবং চিনলুনথাং (সিংগাট)৷ এর আগেই 'কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স' বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা অস্বীকার করেছিল। বিধানসভা অধিবেশন ২১ অগাস্ট শুরু হতে পারে। তারমধ্যেই এই সমর্থন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল এই দল।
এর আগে, কুকি পিপলস অ্যালায়েন্সের সভাপতি টংমাং হাওকিপ জানিয়েছিলেন,'মণিপুরে চলমান সহিংসতা এবং পৃথক প্রশাসন সম্পর্কিত কুকি সম্প্রদায়ের দাবির বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধান পাওয়া যায়নি। সেই কারণে কুকি-জোমি-হামার বিধায়কদের জন্য বিধানসভা অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেখানে যোগদান করা সম্ভব হবে না।'
মণিপুর বিধানসভায় সরকারের গণিত
মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির ৩২ জন সদস্য রয়েছে। সেখানে ৫ জন এনপিএফ বিধায়ক এবং তিনজন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে৷ বিরোধী বিধায়কদের মধ্যে এনপিপির সাতজন, কংগ্রেসের পাঁচজন এবং জেডিইউ ছয়জন রয়েছেন। কুকি পিপলস অ্যালায়েন্স (কেপিএ), কেপিএ সভাপতি টংমাং হাওকিপের দল, ২০২২ সালের মার্চ মাসে মণিপুরে সরকার গঠনের জন্য বিজেপিকে সমর্থন করেছিল।
গত ৩ মে মণিপুরে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ থেকে শুরু হয়েছে মণিপুরে সংঘাত। মূলত, মেইতেই ও কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘাত রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি নিতে শুরু করে। মণিপুরের ৫৩ শতাংশ জনবসতি মেইতেইদের। আর তাঁদের বেশিরভাগেরই বসবাস ইম্ফল উপত্যকায়। আর নাগা, কুকিরা সেখানের জনবসতির ৪০ শতাংশে অবস্থান করে। তাঁরা সেখানের পাহাড়ি জায়গায় বসবাস করে থাকেন।
এদিকে মণিপুরে শান্তি বজায় রাখতে আরও ১০ কোম্পানি আধা সেনা পাঠানো হচ্ছে সেই রাজ্যে। গত ৩ মে মণিপুরে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৪০ হাজার আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু একাধিকবার তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। এহেন পরিস্থিতিতে মণিপুরে শান্তি ফেরাতে আধা সামরিক বাহিনীর উপরেই আস্থা রাখছে প্রশাসন।