ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। প্রশ্নফাঁসের তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক নানা নাম। এই দুর্নীতিতে এবার উঠে এল রবি অত্রি নামে এক ব্যক্তির নাম। উত্তরপ্রদেশে পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার মূলচক্রী ছিলেন রবি, এমনটাই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। গত ১০ এপ্রিল রবিকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। তদন্তকারীদের দাবি, নিটের প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারিতেও রবির যোগ রয়েছে। নিট-কাণ্ডে সঞ্জীব মুখিয়া নামে এক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে। সঞ্জীবের সঙ্গে রবির যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা রবি। তদন্তকারীদের দাবি, প্রশ্নফাঁসে একেবারে পটু রবি। উত্তরপ্রদেশে পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে রবি এবং রাজীব নয়ন মিশ্র নামে এক ব্যক্তি মূলচক্রী বলে দাবি করা হয়েছে।
রবির সঙ্গে বিহারের সঞ্জীব মুখিয়া এবং অতুল ভাতসের যোগ রয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। রবি এবং সঞ্জীবের পুত্র ডা. শিবকুমার একসঙ্গে পড়াশোনা করেছেন। বিপিএসসি শিক্ষক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে সঞ্জীবের ছেলে ইতিমধ্যেই জেলে।
সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে রবি জানিয়েছেন যে, দ্বাদশ শ্রেণিতে পাশ করার পর ডাক্তারির প্রস্তুতি নিতে কোটায় গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই প্রশ্নফাঁসের কারবারিদের সঙ্গে তাঁর যোগ তৈরি হয়।
অন্য দিকে, বিহারে নিটের প্রশ্নফাঁসের ঘটনার কথা মেনে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। এই ঘটনায় সঞ্জীবকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হয়েছে। পাটনা, নালন্দা, গয়া ও নওয়াদা জেলার পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে। নগরনৌসার শাহপুরে সঞ্জীবের গ্রামের বাড়িতেও পুলিশি অভিযান চলছে। সঞ্জীবের আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডেও তদন্ত জোরদার করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের দেওঘর থেকে ৫ জনকে এবং রাঁচি থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট এবং অধ্যাপক নিয়োগের পরীক্ষা ইউজিসি নেট ঘিরে বিতর্কের আবহে প্রশ্নফাঁস রুখতে বিশেষ আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে কড়া শাস্তির বিধান দেওয়া হয়েছে এই আইনে। পরীক্ষা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেই এই আইন নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। পাবলিক এগজামিনেশনস (প্রিভেনশন অফ আনফেয়ার মিনস) আইন ২০২৪ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পাস হয়েছিল আইনটি। দেশে বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস রোখার উদ্দেশ্যেই এই আইনটি আনা হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় কোনও নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুর্নীতির অভিযোগে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে কমপক্ষে ৩-৫ বছরের কারাদণ্ড এবং সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে ৫-১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে।