নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। ওনার পরবর্তী প্রজন্ম সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। কিন্তু, ওনার পূর্বপুরুষ কে ছিলেন, সেই ব্যাপারে আপনার কি কোনও ধারণা আছে? হ্যাঁ, আপনি শিরোনামটা ঠিকই পড়ছেন। সুভাষ চন্দ্র বসুর পূর্বপুরুষ ছিলেন একজন খান সাহেব! আগামী ২৩ জানুয়ারি এই মহান রাষ্ট্রনায়কের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হবে। তার আগে সুভাষের পূর্বপুরুষের গল্পটা জানবেন না? আসুন জেনে নিই।
আমরা সকলেই জানি, সুভাষ চন্দ্র বসুর আদি বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোদালিয়া গ্রামে। এই গ্রাম এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পুরন্দর খানের প্রচুর জমিজমা রয়েছে। এবার প্রশ্ন হল কে এই পুরন্দর খান? এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, পুরন্দর খান আসলে কারোর নাম নয়। এটা একটা উপাধি মাত্র! বাংলার স্বাধীন নবাব হুসেন শাহের পরামর্শদাতা গোপীনাথ বসুকে এই উপাধি দেওয়া হয়েছিল। এবার যোগসূত্রটা আপনারা আন্দাজ করতে পারলেন!
One Sunday I rode my bike and landed up at #Subhasgram which is a village outskirt of Kolkata. Little did I know that the name Subhas had everything to do with #Netaji Subhash Chandra Bose and his connection to #HaranathLodge at #Kodalia.
— Subhadip Mukherjee (@subhadipindia) April 21, 2020
Read new blog https://t.co/gPaMq6ureq pic.twitter.com/niqARFM8Kd
আসুন পরিচয়টা আরও খানিকটা সবিস্তারে দেওয়া যাক। গোপীনাথ বসু ছিলেন গৌড়েশ্বরের নবাব হুসেন শাহের প্রধান অমাত্য। গোপীনাথ বসুর কাজে খুশি হয়ে হুসেন শাহ তাঁকে পুরন্দর খান উপাধি দেন। সেইসঙ্গে দিয়েছিলেন অনেক জমি-জায়গাও। আজ সেই জায়গাকেই আমরা সুভাষগ্রাম নামে চিনি। তো, প্রথমে এই জায়গা পুরোটাই জঙ্গলে ভর্তি ছিল। কেউ কেউ বলেন আবার, গোপীনাথ নাকি নবাবের থেকে ওই জমি কিনে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি ধীরে ধীরে জঙ্গল সাফ করে ওই অঞ্চলে জনবসতি গড়ে তুলেছিলেন।
কথিত আছে, গোপীনাথ বসু ওই জঙ্গল সাফ করার পর সেখানে নাকি একটি বিশাল পুকুরও খনন করেছিলেন। নাম দিয়েছিলেন খান পুকুর। তিনি নিজের উপাধির সম্মান রাখতেই নাকি এমন নামকরণ করেছিলেন। আরও একটা মজার বিষয় হল, ওই পুকুরটি চাঙার অর্থাৎ কোদাল দিয়ে খোঁড়া হয়েছিল। ইতিপূর্বে জায়গাটির নাম ছিল মালঞ্চ-মাহিনগর। কিন্তু, কোদাল দিয়ে ওই পুকুর খননের পর থেকে জায়গাটার নাম হয়ে যায় কোদালিয়া। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, সুভাষচন্দ্র বসু হলেন পুরন্দর খানের চতুর্দশ প্রজন্ম। তার পরের ইতিহাস তো আপনাদের সকলেরই মোটামুটি জানা।
আজ তবে এটুকুই থাক। আগামী পর্বে আপনাদের জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অজানা গল্প নিয়ে আমরা হাজির হব। ততক্ষণ ভালো থাকবেন।