নেতাজি @ ১২৫ : রবি ঠাকুরের সুরেই রচিত হয়েছিল আজ়াদ হিন্দ সরকারের জাতীয় সঙ্গীত

এবার আসা যাক আজাদ হিন্দ সরকারের জাতীয় সঙ্গীতের কথায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভারত ভাগ্য বিধাতা' কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রচনা করা হল 'শুভ সুখ চৈন কী বরখা বরষে ভারত ভাগ হৈ জাগা'। এই সঙ্গীতের ব্যাপারে আরও খানিকটা বিশদে জেনে নেবেন না?

Advertisement
নেতাজি @ ১২৫ : রবি ঠাকুরের সুরেই রচিত হয়েছিল আজ়াদ হিন্দ সরকারের জাতীয় সঙ্গীতনেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু
হাইলাইটস
  • সিঙ্গাপুরে স্বাধীন আজ়াদ হিন্দ সরকার গঠন করেছিলেন নেতাজি
  • স্বরগ্রাম রচনা করেছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিং ঠাকুর
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'জন-গণ-মন' থেকে হিন্দুস্থানী সুরে এই 'শুভ সুখ চৈন' গানটি লিখেছিলেন

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর অবদান অস্বীকার করা যায় না। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন জওহরলাল নেহরু। কিন্তু, এই ঘটনার প্রায় বছর চারেক আগে সিঙ্গাপুরে স্বাধীন আজ়াদ হিন্দ সরকার গঠন করেছিলেন নেতাজি। সেই সরকারের একটা জাতীয় সঙ্গীতও রচনা করা হয়েছিল। আর সেই গানের সুর ধার করা হয়েছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত 'জন-গন-মন-অধিনায়ক' থেকে। আগামী ২৩ জানুয়ারি দেশের এই পরাক্রমী রাষ্ট্রনায়কের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হবে। তার আগে আজ়াদ হিন্দ সরকারের এই জাতীয় সঙ্গীতের ব্যাপারে আরও খানিকটা বিশদে জেনে নেবেন না?

১৯৪১ সালে পুলিশের চোখকে ধুলো দিয়ে জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান সুভাষ চন্দ্র বসু। প্রথমে তিনি জার্মানিতে গিয়ে যুদ্ধবন্দিদের নিয়ে এক বাহিনী তৈরি করেন। কিন্তু, বাহিনী তৈরি করলেই তো আর হল না। ভৌগলিক কারণে অত দুর থেকে যে লড়াইটা চালানো সম্ভব নয়, সেটা খুব তাড়াতাড়িই বুঝে গিয়েছিলেন সুভাষ। সেকারণে তিনি জাপানে চলে আসেন। জাপানে রাসবিহারী বসু তাঁর হাতে আজ়াদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব তুলে দেন। পাশাপাশি জাপান সরকারও সেইসময় আশ্বাস দিয়েছিল যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তারা নেতাজিকে সবরকমভাবে সাহায্য করবেন। তারপর ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের ক্যাথে সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে প্রতিষ্ঠিত হয় তথাকথিত প্রথম 'স্বাধীন' ভারতীয় সরকার ৷ মোটামুটিভাবে আজাদ হিন্দ সরকারের এই হল প্রেক্ষাপট। মূলত, দেশের স্বাধীনতার জন্য শুধুমাত্র মিলিটারি কার্যক্রমই যথেষ্ট ছিল না। আলাদা করে প্রচার কার্যক্রম করার জন্যই এই সরকার গঠন করা হয়েছিল।

এবার আসা যাক আজাদ হিন্দ সরকারের জাতীয় সঙ্গীতের কথায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভারত ভাগ্য বিধাতা' কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রচনা করা হল 'শুভ সুখ চৈন কী বরখা বরষে ভারত ভাগ হৈ জাগা'

গানটির স্বরলিপি তৈরি করেছিলেন অম্বিক মজুমদার এবং স্বরগ্রাম রচনা করেছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিং ঠাকুর। গানটা পিয়ানোতে বাজিয়ে নেতাজিতকে শোনানো হয়েছিল। আজাদ হিন্দ রেডিও-র অন্যতম লেখক মমতাজ হুসেন এবং আজাদ হিন্দ বাহিনীর কর্নেল আবিদ হুসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'জন-গণ-মন' থেকে হিন্দুস্থানী সুরে এই 'শুভ সুখ চৈন' গানটি লিখেছিলেন। তবে শুধুমাত্র গান রচনাই নয়, এই আজাদ হিন্দ সরকার ডাকটিকিট এবং নোটও ছাপিয়ে ছিল। স্থাপিত হয়েছিল আজ়াদ হিন্দ ব্যাঙ্ক এবং বিদেশে দূতাবাস। কিন্তু, দূর্ভাগ্যের ব্যাপার এই সরকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।

Advertisement

POST A COMMENT
Advertisement