নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ১৮ জন। একই সঙ্গে আহত হয়েছেন বহু মানুষ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং অনেক বিরোধী নেতা দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এদিকে দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহ্য্য ঘোষণা করেছে সরকার। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের আড়াই লক্ষ টাকা এবং অল্প আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব শোক প্রকাশ করেছেন। বৈষ্ণব টুইটারে লেখেন, 'নতুন দিল্লি রেল স্টেশনে দুর্ভাগ্যজনক পদপিষ্ঠের ঘটনায় গভীরভাবে দুঃখিত। যারা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের জন্য প্রার্থনা করছি। এই মর্মান্তিক ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য পুরো টিম কাজ করছে।'
রাষ্ট্রপতি দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় টুইটারে লিখেছে, 'নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মানুষের মৃত্যুর খবর জেনে খুবই দুঃখ লাগছে। আমি শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।'
মৃতদের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন
(সবাই বিহারের বাসিন্দা)
এছাড়াও দুর্ঘটনায় দিল্লির ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পিঙ্কি দেবী (৪১ বছর), শীলা দেবী (৫০ বছর), ভয়ম (২৫ বছর), পুনম (৩৪ বছর, মমতা ঝা (৪০ বছর), বেবী কুমারী (২৪ বছর), মনোজ (৪৭ বছর)। অপর একজনকে হরিয়ানার ভিওয়ানির বাসিন্দা মোহিত মালিকের স্ত্রী সঙ্গীতা মালিক (৩৪ বছর) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে
দিল্লি রেল স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নর্দান রেলের সিপিআরও হিমাংশু শেখরও দুর্ঘটনাটি সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে যখন ঘটনাটি ঘটে তখন পাটনার দিকে যাওয়া মগধ এক্সপ্রেস ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল এবং সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে জম্মুর দিকে যাচ্ছিল। এই সময় প্ল্যাটফর্মে ভিড় থাকায় অনেক যাত্রী পিছলে পড়ে যান। যার জেরে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনাটি একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তদন্ত করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার মতো কেউ ছিল না। অভিযোগ, ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসবে বলে একটি ট্রেনের ঘোষণা করা হয়েছিল, পরে বলা হয় আরেকটি স্পেশাল ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসবে। এমতাবস্থায় দু’দিক থেকে ভিড় এলে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। সূত্র অনুসারে, রেল কুম্ভের জন্য একটি স্পেশাল ট্রেনের ঘোষণা করেছিল। প্রচুর টিকিট বিক্রি দেখেই স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ভিড় সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না।
প্রয়াগরাজ গামী ট্রেনটি ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিল। সেখানে ইতিমধ্যেই প্রচুর ভিড় ছিল এবং অন্যান্য যাত্রীরাও সেখানে পৌঁছনোর চেষ্টা করছিলেন। এদিকে, রেল হঠাৎ করে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি স্পেশাল ট্রেনের ঘোষণা করে। যে যাত্রীরা আগে থেকেই ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তাঁরাও এখন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ছুটে যান, যা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। শেষে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।