ইথানল মেশানো পেট্রোল ইস্যুতে এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন কেন্দ্রের সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়করি। মন্ত্রীর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে 'পেইড পলিটিক্যাল ক্যাম্পেন' বা টাকা দিয়ে রাজনৈতিক অপপ্রচার করা হচ্ছে। সেই অপ্রচারের শিকার তিনি।
আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (SIAM)-এর ৬৫তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তৃতা রাখতে গিয়ে গডকরি বলেন, '২০ শতাংশ ইথানল মেশানো পেট্রোল নিয়ে যে সব আশঙ্কা ছড়ানো হচ্ছে, তা ইচ্ছাকৃতভাবে অতিরঞ্জিত। আমার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক অপ্রচার চালানো হচ্ছে।' তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই জ্বালানি নিরাপদ, আর তা পরীক্ষিত ও অনুমোদিত অটোমোবাইল রেগুলেটর এবং গাড়ি নির্মাতাদের তরফেই।
আমার বিরুদ্ধে পেইড ক্যাম্পেন চলছে: গড়করি
গডকরির কথায়, E20 প্রোগ্রাম নিয়ে অটোমোটিভ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (ARAI) এবং সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই পরিষ্কার মত দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করতে প্রচার চালানো হচ্ছে। এটা পেড ক্যাম্পেন। তাই এদিকে মন দেবেন না।
ইথানল মিশ্রিত জ্বালানি ও বাধ্যতামূলক E20 বিক্রির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন গডকরি। গাড়ি মালিকদের অভিযোগ, E20 পেট্রোল মাইলেজ কমিয়ে দিচ্ছে এবং পুরনো গাড়ির ইঞ্জিনের ক্ষতি করছে। ২০২৩ এর আগে নির্মিত কিছু গাড়ি নিয়ে গ্যারেজ থেকে একই ধরনের অভিযোগ এসেছে।
জনস্বার্থ মামলা খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট
তবে গডকরি বারবার এর কার্যকারিতা এবং সুফলের কথা তুলে ধরছেন। গত মাসে বিজনেস টুডে-র ইভেন্টে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, 'আমাকে একটা উদাহরণ দেখান, যেখানে কোনও গাড়ি E20-এর কারণে নষ্ট হয়েছে। ARAI বা SIAM, কেউই এমন একটি প্রমাণিত ঘটনা খুঁজে পায়নি।' এই মাসের শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টও সরকারের অবস্থানকে জোরালো করে, যখন আদালত একটি জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দেয়। ওই মামলায় E20 চালু রোখার দাবি জানানো হয়েছিল। আদালতের রায় সরকারের পরিস্কার জ্বালানি নীতি বাস্তবায়নে বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
E20-এর জন্য তৈরি গাড়িগুলির ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি
গাড়ি নির্মাতা সংস্থা এবং ফুয়েল সাপ্লায়াররা জানাচ্ছে, E20-এর জন্য তৈরি গাড়িগুলির ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টি বহাল থাকবে। সরকারের দাবি, ইথানল মিশ্রণ তেলের আমদানি কমাবে, দূষণ কমাবে এবং কৃষকের আয়ের নতুন রাস্তা খুলবে। এদিন গডকরি ফের বলেন, 'আমরা ভুট্টা থেকে ইথানল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর ফলে উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং গোটা দেশে ভুট্টা চাষ তিনগুণ বেড়েছে। ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে গ্রোথ কম। কৃষিকে এনার্জি ও পাওয়ার সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত করার ফলে কৃষকরা সরাসরি লাভবান হচ্ছেন, অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে। এতে কোনও ভুল নেই।'
গডকরি শিল্প মহলের সামনে নতুন নীতি প্রস্তাবও রাখেন। তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছি, যারা পুরনো গাড়ি স্ক্র্যাপ করে সার্টিফায়েড সেন্টার থেকে নতুন গাড়ি কিনবেন, তাঁদের জন্য জিএসটি সুবিধা দেওয়া হোক।