বিহারে বিধানসভা অধিবেশনে জাতি গণনার রিপোর্ট তুলে ধরা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের একটি বক্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক। নীতীশ কুমার যখন মন্তব্যটি করেন তখন তাঁর দলের বিধায়করাও অস্বস্তিতে পড়ে যান।
বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন নীতীশ কুমার বলেন, বিহারে মহিলাদের স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে। এতে রাজ্যের উন্নতি হবে। মেয়েরা শিক্ষিত হওয়ায় জনসংখ্যার হারও নিয়ন্ত্রিত হবে। আর এই বক্তব্যটা বোঝাতে গিয়ে নীতীশ কুমার বলেন, 'মেয়েরা শিক্ষিত হলে বিয়ের পর তারা অনেক সচেতন থাকবে। বিয়ের পর ছেলেরা যেটা রোজ রাতে করে ফলে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ে শিক্ষিত হলে, পড়ালেখা করে... ওটা থাক না...এই কারণেই সংখ্যা কমছে।'
নীতীশ কুমারের এই বক্তব্যের ফলে বিধায়কদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। নীতীশ সমর্থক বিধায়করা অস্বস্তিতে পড়েন। তবে ক্ষুব্ধ হন মহিলা বিধায়করা। কোনও কোনও বিধায়ক আবার হাসছিলেনও। ভাষণে নীতীশ জানান, ২০১১ সালের আদমশুমারির তুলনায় সাক্ষরতার হার ৫১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৯ শতাংশের উপরে হয়েছে।
তিনি বলেন, 'মহিলাদের সাক্ষরতার অনেক উন্নতি হয়েছে। স্বাক্ষরতার হার ৫১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৩ শতাংশের উপরে হয়েছে। ম্যাট্রিক পাসের সংখ্যা ২৪ লাখ থেকে বেড়ে ৫৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এর আগে ইন্টারপাস মহিলার সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৫৫ হাজার। এখন তা ৪২ লাখের উপরে। স্নাতকস্তরে মহিলাদের সংখ্যা ৪ লাখ ৩৫ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখে।
এদিকে নীতীশের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে বিজেপি নেতারা প্রতিক্রিয়া দেন। ভারতীয় জনতা পার্টির কিশোর প্রসাদ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আরও ভালভাবে বিষয়টা বোঝাতে পারতেন। আর এক বিজেপি বিধায়ক নিকি হেমব্রমের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান রেখে আরও মর্যাদাপূর্ণভাবে বলতে পারতেন।
তবে এদিন সংরক্ষণ নিয়েও বড় ঘোষণা করেন নীতীশ কুমার। বিহারে ওবিসি সংরক্ষণ বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তিনি। সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'সংরক্ষণ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ নেওয়া হবে। আমরা এই অধিবেশনেই পরিবর্তনগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। বিহারে কীভাবে সংরক্ষণের পরিধি বাড়ানো হবে তার একটি রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে। এই প্রস্তাব অনুসারে, বর্তমানে SC-তে যে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে তা বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হবে। যেখানে এসটি ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা হবে।'