ওড়িশার বালেশ্বরে ফকির মোহন কলেজের ২০ বছরের ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। কলেজের অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটির কাছে দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, অভিযুক্ত অধ্যাপক সমীরকুমার সাহু ছাত্রীকে অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন।
অভিযোগের নথিতে লেখা হয়েছে, গত ১ জুলাই ওই ছাত্রী কমিটিকে জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁর কাছ থেকে ‘বিশেষ সুবিধা’ দাবি করেছিলেন। তিনি যখন শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করেন, কী ধরনের সুবিধা তিনি চান, তখন সাহু বলেন, 'তুমি তো কচি খুকি নও যে আমি কী চাই বুঝতে পারছ না।' ছাত্রী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়, অভিযুক্ত তাঁকে মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন বলে অভিযোগ।
মিনতি শেঠি নামে কমিটির এক সদস্য জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ছাত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে অধ্যাপক অতিরিক্ত কিছু আদায় করতে চাইছিলেন। শেঠির কথায়, 'অভিযোগের পক্ষে আমাদের হাতে কোনও সরাসরি প্রমাণ ছিল না। এই ধরনের অভিযোগ প্রমাণ করা খুব কঠিন।' তিনি আরও জানান, গত ৩০ জুনের সেমেস্টারে ওই অধ্যাপক ছাত্রীকে পরীক্ষার সুযোগ দেননি। তাতেই ভেঙে পড়েন ছাত্রী।
অন্যদিকে অভিযোগ কমিটির কোঅর্ডিনেটর জয়শ্রী মিশ্র বলেন, সাহুকে ইন্টিগ্রেটেড বিএড বিভাগের প্রধান পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করা হয়েছিল, তবে তা তাঁর কঠিন ব্যবহারজনিত কারণে, যৌন হেনস্তার অভিযোগে নয়। সেই সুপারিশও কলেজ প্রশাসন কার্যকর করেনি।
ছাত্রী মৃত্যুর পর তাঁর বাবা কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, 'মেয়ের অভিযোগের বিষয়ে কমিটি একপেশে রিপোর্ট দিয়েছে। অভিযোগে কান দিলে আজ আমার মেয়ে বেঁচে থাকত। সঠিক তদন্ত হলে এই পরিণতি আসত না।'
গত ১২ জুলাই কলেজ চত্বরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ছাত্রী। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে কড়া শাস্তির দাবি উঠেছে।