
রাজস্থানের যোধপুর-পালি হাইওয়ে সংলগ্ন এক বিস্ময়কর ধর্মস্থল বান্না মন্দির। এখানে দেবতা কোনও পাথরের মূর্তি বা প্রথাগত প্রতীক নন, ভক্তদের আরাধ্য হল একটি বুলেট মোটরসাইকেল। যার নম্বর RNJ 7773। বিশ্বাস করা হয়, এই বাইকে আরোহী ওম বান্নার আত্মা আজও পথচলতি মানুষকে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করেন।
মন্দিরের উৎপত্তির রহস্যময় গল্প
কথিত আছে, ১৯৮৮ সালের ২ ডিসেম্বর ওম বান্না সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বরণ করেন। দুর্ঘটনার পর পুলিশ তার বুলেট বাইকটি থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরদিন ভোরে দেখা যায়-বাইকটি নিজে নিজে স্টার্ট নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে ফিরে গেছে।
পুলিশ আবার বাইকটি নিয়ে এসে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে, এমনকি তালা লাগায় এবং পেট্রোলও বের করে দেয়। কিন্তু প্রতিবারই সেই বাইক রহস্যজনকভাবে ওম বান্নার মৃত্যুর স্থানে ফিরে যেত।
এই ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে বিশ্বাস জন্মায় যে ওম বান্নার আত্মা পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। এরপরই সেখানে একটি ছোট্ট মন্দির গড়ে তোলা হয় এবং বুলেট বাইকটিকে স্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়।
ভক্তদের ভক্তি ও অদ্ভুত উৎসর্গ
এই মন্দিরে ভক্তরা শুধু ফুল, নারকেল বা টাকা নয়, মদের বোতলও উৎসর্গ করেন। তাদের বিশ্বাস, ওম বান্না তাদের যাত্রাকে সুরক্ষিত রাখবেন। রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় বহু গাড়িতে ‘ওম বান্না’ লেখা থাকে। নতুন গাড়ি কিংবা বাইক কেনার পর অনেকেই প্রথমেই এই মন্দিরে এসে ‘দর্শন’ করেন।
বিশ্বাসে টিকে থাকা এক মন্দির
শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসেন। দুর্ঘটনাপ্রবণ হাইওয়েতে যাতায়াতকারী ট্রাক চালক, বাইকার থেকে শুরু করে সাধারণ পর্যটক-সকলেই এই মন্দিরের সামনে নেমে প্রণাম করে যান। তাদের বিশ্বাস, ওম বান্না তাদের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবেন।