ভারতে ১০৫০০ কারখানায় তৈরি হয় ওষুধ। সেখানে ২০১৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, দেশে মাত্র ১৪৬৭ জন ড্রাগ ইন্সপেক্টর রয়েছেন। আর এই সংখ্যাই চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দেয় যে ভারতের ওষুধের মান পরীক্ষার বিষয়টা ঠিক কতটা তলানিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওষুধ তৈরির পর তার মান ঠিক রয়েছে কি না সেটা দেখেন ড্রাগ ইন্সপেক্টররা। আর ভারতে সেই আধিকারিকের সংখ্যা অনেকটা কম রয়েছে। যার ফলে ওষুধের মান নির্ণয় করতে গিয়ে বেগ পেতে হয়। বাজারে চলে আসে ক্ষতিকর সব ওষুধ। যা খেয়ে প্রাণনাশের আশঙ্কাও বাড়ে বলে অভিযোগ।
বিপদের নাম কোল্ডরিফ
এই যেমন বিষাক্ত Coldrif কাফ সিরাপ খেয়ে মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে প্রাণ হারিয়েছে ২৬ শিশু। এই কাফ সিরাপটি তৈরি করে Sresan Pharmaceuticals। এই সিরাপে রয়েছে ৪৮.৬ শতাংশ ডাইথিলিন গ্লাইকল। এটি একটি ক্ষতিকর রাসায়ানিক। আর এই রাসায়নিক সিরাপে গ্রহণযোগ্য মাত্রার থেকে ৫০০ শতাংশ বেশি ছিল। যার ফলে মৃত্যু হয় শিশুগুলির বলে অভিযোগ।
এর পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। তাদের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ করা হয় এই সিরাপ। পাশাপাশি এই সিরাপের স্টক ব্যবহার বন্ধ করা হয়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় চিকিৎসককে।
তবে এই ব্যবস্থা যদি আগেভাগেই নেওয়া যেত, ওষুধগুলি যদি আগেই পরীক্ষা করা যেত, তাহলে এতগুলি নিরীহ প্রাণ যেত না বলেই মনে করছেন অনেকে। যদিও সেই মান পরীক্ষা করার মতো মানুষই নেই বলে অভিযোগ।
আমেরিকার পরিসংখ্যান জেনে নিন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২৫০০ ওষুধপ্রস্তুকারী সংস্থা ১৫৮০টি জায়গায় ওষুধ তৈরি করেন। আর ওষুধের মান ঠিক রাখার জন্য আমেরিকা ১৮০০০ হাজার বিজ্ঞানী, ইন্সপেক্টর এবং আধিকারিক নিয়োগ করা রয়েছে। সেখানে ভারতের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এখানে ওষুধের মান দেখার জন্য পরিমিত আধিকারিকই নেই। আর সেই কারণেই পরিস্থিতি খারাপ দিকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাই সরকারকে বিশেষজ্ঞরা আরও বেশি সংখ্যক ড্রাগ ইন্সপেক্টর নিয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাতেই ওষুধের মান ঠিক রাখা সম্ভব। মানুষের প্রাণ বাঁচানো যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।