বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ। এক হয়েই লড়াই করবে। পরবর্তী বৈঠক হবে ১০ থেকে ১২ জুলাই শিমলায়। আজ অর্থাত্ শুক্রবার পটনায় নীতীশ কুমারের বাসভবনে বিরোধীদলগুলির বৈঠকের নির্যাস এটাই। ২০২৪ সালে বিরোধী ঐক্যে শান দেওয়ার প্রথম মেগা বৈঠকে একসঙ্গে দেখা গেল রাহুল গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজাদের। এক কথায়, বিজেপি-কে কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাচ্যূত করতে কোমর বেঁধে লড়াইয়েরই বার্তা দিলেন ১৭টি বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা।
এদিন পটনায় বিরোধীদের মহা বৈঠকটি চলল প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'খুব ভাল মিটিং হয়েছে। অনেক দিন পর লালুজি রাজনৈতিক মিটিং করলেন। তিনটি বিষয়ে সমস্যা মিটেছে। আমরা একসঙ্গে লড়ছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ছি। আগামী মিটিং শিমলায় হবে। আমাদের বিরোধী বলবেন না। আমরাও দেশপ্রেমী। মণিপুর জ্বললে আমাদেরও মন কাঁদে। বিজেপি-র অপশাসন চলছে। বাংলায় রাজভবনকে অল্টারনেটিভ সরকার বানিয়ে দিয়েছে। যা ইচ্ছে করছে। কেউ কিছু বিরুদ্ধে বললেই ইডি, সিবিআই লাগিয়ে দিচ্ছে। বহু আইনজীবীকে আদালতে পাঠিয়ে কোনও না কোনও ভাবে মামলা করিয়ে সিবিআই, ইডি আমাদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি সরকার।'
BJP ও RSS-কে একযোগে আক্রমণ করে রাহুল গান্ধী বললেন, 'নীতীশজি আজ লাঞ্চে বিহারের সব ভাল খাবার খাওয়ালেন। লিট্টি, চোখা। ভারতের মূল ভিত্তিতে আক্রমণ করছে বিজেপি ও আরএসএস। এটা আদর্শের লড়াই। এ ক্ষেত্রে আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমাদের কিছু মতপার্থক্য থাকবে। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একসঙ্গে কাজ করব। বিচারধারা রক্ষা করব। বিরোধী জোটের এটি একটি প্রক্রিয়া। ভাল ভাবে এগিয়ে চলেছে।'
এদিনের বৈঠক আয়োজন করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি বললেন, 'রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব, শরদ পাওয়ার, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মেহবুবা মুফতি, উদ্ধব ঠাকরে, ওমর আবদুল্লা, সীতারাম ইয়েচুরি, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য সহ সবাই এসেছেন মিটিংয়ে। খুব ভাল মিটিং হয়েছে। একসঙ্গে চলার সম্মতি হয়েছে। আগামী মিটিং কিছু দিন পরেই হবে। একসঙ্গে ভোট লড়ার সহমত হয়েছেন সবাই।'
পটনায় এই মিটিংয়েই বহু দিন একমঞ্চে দেখা গেল রাহুল গান্ধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরে সনিয়া গান্ধীর বাড়িতে শেষবার যে বৈঠক করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানে রাহুল গান্ধীও ছিলেন। তারপর থেকে রাহুল ও মমতাকে একমঞ্চে দেখা যায়নি। বরং বারবার কংগ্রেসকে আক্রমণ করতেই শোনা গিয়েছে তৃণমূলনেত্রীকে। যদিও রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের পরে কেন্দ্রের তীব্র সামোলাচনাই শোনা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়।