পটনায় বিরোধীদের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, জাতীয়স্তরে বিরোধী জোটে বাংলায় অধীর চৌধুরীদের ভূমিকা যে অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। পরে বিরোধীদের নেতানেত্রীদের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জোট গড়তে সকলে রাজি হয়েছেন। তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্রের খবর, বৈঠকে রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গের কাছে প্রদেশ কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন নিয়ে অধীর চৌধুরী যেভাবে ধর্না দিয়েছে তা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন। মমতার সাফ কথা,'সবাইকে মন বড় করতে হবে। পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করলে বিজেপির ফায়দা হবে।'
গত ২৪ এপ্রিল নবান্নে এসেছিলেন নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব। সেখানেই পটনায় বিরোধীদের বৈঠক ডাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা। এই পটনা থেকে জয়প্রকাশ নারায়ণের বিরোধী আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকেও মমতা বলেন,'পটনা থেকে যা শুরু হয় তা জনআন্দোলনের রূপ নেয়। এজন্য বৈঠক করতে বলেছিলাম। আমিই বলেছিলাম, দিল্লিতে মিটিং করেও ফলপ্রসূ হয়নি। পটনা থেকে শুরু করুন।'
বৈঠকের নির্যাস তুলে ধরে মমতা বলেন,'তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করব। দ্বিতীয়ত পরের বৈঠক হবে সিমলায়। তৃতীয়ত, বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে সর্বসম্মতভাবে সরব হব।' এর আগেও একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এ দিনও বৈঠকে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন নেত্রী।
বাংলায় একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। একাধিক মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। রাজ্যে সিপিএম ও কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সোচ্চার। সেই প্রেক্ষাপটে রাহুল-খাড়গের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকেই সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাজে লাগানোর অভিযোগ করলেন মমতা। তিনি বলেন,'বিজেপির স্বৈরতন্ত্র ও একনায়কতন্ত্র বিপজ্জনক। নির্বাচিত সরকারের জায়গায় বিকল্প সরকার চালাচ্ছে। না জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস করে দিল। যা মর্জি করে। কেউ কিছু বললেই সিবিআই, ইডি লাগিয়ে দেয়। আইনজীবীদের আদালতে পাঠিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি নির্দেশ আদায় করে আনে। বেকারত্ব নিয়ে চিন্তা করে না। অর্থনীতি নিয়ে চিন্তা করে না। দলিত, মহিলাদের নিয়ে চিন্তা করে না। ১০০ দিনের টাকা দেয় না। আবাস যোজনার টাকা দেয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে মর্জিমাফিক উপাচার্য নিয়োগ করে। কালো আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করব। দেশের জনতাকে রক্ষা করব। আর একবার ওরা সরকারে এলে, দেশে আর নির্বাচনই হবে না।'