অপরাধ আর অপরাধী রুখতে জিরো টলারেন্স নীতি। গত আট বছরে উত্তরপ্রদেশে ২৫৬ জন কুখ্যাত অপরাধীকে এনকাউন্টার করা হয়েছে। সবচেয়ে এনকাউন্টার হয়েছে মেরঠে। অপরাধ দমনে গত ২০ দিনে এক ডজনেরও বেশি এনকাউন্টার হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে রাজ্যে ১৫,০০০ এরও বেশি এনকাউন্টার সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে ২৫৬ জন কুখ্যাত অপরাধীকে নির্মূল করা হয়েছে। মেরাঠে সর্বাধিক সংখ্যক ৮৫ জন অপরাধীকে নিকেশ করা হয়েছে। এনকাউন্টারের সংখ্যার দিক থেকে বারাণসী জোন দ্বিতীয় এবং আগ্রা জোন তৃতীয় স্থানে রয়েছে। পুলিশের কড়া পদক্ষেপের ফলে অনেক বাঘা বাঘা অপরাধীরা উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে অন্য রাজ্য গা ঢাকা দিয়ে আছে।
একসময় অপরাধী ও অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে নাম ছিল উত্তরপ্রদেশের। ক্ষমতায় আসার পরে অপরাধ রুখতে জিরো টলারেন্স নীতি নেয় যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। গত সাড়ে আট বছরে রাজ্যে এনকাউন্টারে ২৫৬ জন কুখ্যাত অপরাধীকে হত্যা করা হয়েছে। এই সময়কালে পুলিশ মোট ১৫,৭২৬টি এনকাউন্টার চালিয়েছে। ৩১,৯৬০ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করে। এনকাউন্টারে ১০,৩২৪ জন অপরাধী আহত হয়। অপরাধী ধরতে গিয়ে ১৮ জন পুলিশকর্মী শহিদ হয়েছেন। ১,৭৫৪ জন আহত হয়েছেন।
রাজ্যের মধ্যে মেরাঠ জোনে সর্বাধিক ৪,৪৫৩টি এনকাউন্টার রেকর্ড করা হয়েছে। ৮,৩১২ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৩,১৩১ জন আহত হয়েছেন। ৮৫ জন কুখ্যাত অপরাধীর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। এই সময়কালে, ৪৬১ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন এবং ২ জন শহিদ হয়েছেন। এনকাউন্টার অভিযানে মেরাঠ জোন রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে। একইভাবে, বারাণসী জোনে ১,১০৮টি এনকাউন্টার রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে ২,১২৮ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ২৭ জন অপরাধী নিহত হয়েছে। এই সময়কালে, ৬৮৮ জন অপরাধী এবং ৯৯ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। এনকাউন্টারের সংখ্যার দিক থেকে বারাণসী জোন রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এনকাউন্টারের সংখ্যার দিক থেকে রাজ্যের মধ্যে আগ্রা জোন তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এখানে ২,৩৭৪টি এনকাউন্টার হয়েছে, যাতে ৫,৬৩১ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এনকাউন্টারে ৮১৬ জন অপরাধী আহত হয়েছিল। ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনকাউন্টারের সময় ৫৯ জন পুলিশ অফিসার আহত হয়েছিলেন।
গাজিয়াবাদ কমিশনারেট সর্বাধিক সংখ্যক এনকাউন্টার
এনকাউন্টারের পরিসংখ্যান দেখলে লখনউ জোনে ৮৪৬টি এনকাউন্টারে ১৭ জন কুখ্যাত অপরাধী নিহত হয়েছে। প্রয়াগরাজ জোনে ৫৭২টি এনকাউন্টারে ১০ জন অপরাধী নিহত হয়েছে। বরেলি জোনে ২,০৫৯টি এনকাউন্টারে ১৭ জন, কানপুর জোনে ৭১৭টি এনকাউন্টারে ১২ জন এবং গোরক্ষপুর জোনে ৬৪২টি এনকাউন্টারের মধ্যে ৮ জন অপরাধী নিহত হয়েছে। একইভাবে, লখনউ কমিশনারেটে ১৩৮টি এনকাউন্টারে ১২ জন, গৌতম বুদ্ধ নগরে ১,১১৭টি এনকাউন্টারে ৯ জন, বারাণসী কমিশনারেটে ১৩১টি এনকাউন্টারে ৭ জন, কানপুর কমিশনারেটে ২৩৪টি এনকাউন্টারে ৪ জন, আগ্রা কমিশনারেটে ৪৫৮টি এনকাউন্টারে ৭ জন, গাজিয়াবাদ কমিশনারেটে ৭৩৬টি এনকাউন্টারে ১৩ জন এবং প্রয়াগরাজ কমিশনারেটে ১৪১টি এনকাউন্টারে ৬ জন অপরাধী নিহত হয়েছে।
বিবৃতিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার বলেছে, 'এই অভিযানগুলি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি রাজ্য সরকারের অঙ্গীকারকেই তুলে ধরেছে।' বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, অপরাধ এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কারণে এই সাড়ে আট বছরের দীর্ঘ অভিযান কেবল পরিসংখ্যানগত সাফল্যই এনেছে না। বরং রাজ্যে আইনের শাসনও প্রতিষ্ঠা করেছে। পুলিশের দ্রুত, দৃঢ় এবং সাহসী পদক্ষেপ অনেক অপরাধীকে রাজ্য ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে এবং উত্তরপ্রদেশ এখন একটি নিরাপদ এবং ভয়মুক্ত রাজ্য হিসেবে তার পরিচয় শক্তিশালী করছে।