পহেলগাঁও হামলা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারীদের দাবি, প্রায় ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা ট্রেক করে এসেছিল জঙ্গিরা। কোকেরনাগ জঙ্গল থেকে দুর্গম এলাকা পেরিয়ে বৈসরান উপত্যকা পর্যন্ত এসেছিল তারা।
সূত্রের খবর, হামলার সময় জঙ্গিরা দু'টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছিল। একটি স্থানীয় বাসিন্দার, অপরটি এক পর্যটকের। হামলায় এখনও পর্যন্ত মোট চার জঙ্গি জড়িত ছিল বলে জানা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে তিনজন পাকিস্তানি এবং একজন স্থানীয় বাসিন্দা আদিল ঠোকার বলে জানা গিয়েছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আদিল ঠোকার ২০১৮ সালে হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দিয়েছিল। তারপর পাকিস্তানে যায়। সেখানে লস্কর-ই-তৈবার ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নেয়। ৬ বছর ট্রেনিং নিয়ে ২০২৪ সালে কাশ্মীরে ফেরে। ফেরার পর থেকেই পাকিস্তানি জঙ্গিদের জন্য রসদ জোগানো ও দুর্গম এলাকা পেরোনোর গাইডের কাজ করছিল আদিল।
ফরেনসিক টিম বলছে, ২২ এপ্রিলের হামলায় AK-47 এবং M4 রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে যে কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে, তার ভিত্তিতে এই অনুমান।
সূত্রের দাবি, সেদিন দুই জঙ্গি জঙ্গল এলাকা থেকে বেরিয়ে আসে। তারা প্রথমে পর্যটকদের 'কলমা' পড়তে চাপ দেয়। এরপর একেবারে কাছ থেকে গুলি করে চারজনকে হত্যা করে। এই নৃশংস ঘটনার পরপরই আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেন পর্যটকরা।
অন্য দুই জঙ্গি জিপলাইনের কাছে গুলি চালায়।
এই ঘটনার বড় প্রত্যক্ষদর্শী এক স্থানীয় ফটোগ্রাফার। তিনি একটি গাছের ওপর বসে পুরো ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করেন। তদন্তকারীরা বলছেন, তাঁর এই দুঃসাহসিক কাজের ফলে তদন্তে অনেক সাহায্য মিলেছে। ঠিক কীভাবে হামলা, পর পর কী ঘটেছে, তা বুঝতে সাহায্য করছে তাঁর তোলা ভিডিও ফুটেজ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে NIA অফিসিয়ালি তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। যদিও গত বুধবারই এনআইএ-এর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। সিনিয়র অফিসারদের তত্ত্বাবধানে প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এনআইএ টিম ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে বৈসরান উপত্যকার প্রতিটি অঞ্চল খতিয়ে দেখছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলার সম্পূর্ণ টাইমলাইন তৈরির চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে উপত্যকার ঢোকা ও বের হওয়ার পথ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।