পহেলগাঁও হামলাপহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা নিয়ে বড় আপডেট। হামলার প্রায় ৮ মাস পর চার্জশিট পেশ করল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। ওই চার্জশিটে পাকিস্তানভিত্তিক দুটি জঙ্গি সংগঠন- লস্কর ই তইবা (LeT) এবং দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF) কে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই চার্জশিটে আরও ৫ জন সন্দেহভাজনের নামও যুক্ত করা হয়েছে।
সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে, NIA যে চার্জশিট জমা দিয়েছে তা ১৫৯৭ পাতার। এই চার্জশিটে হামলার পিছনে পাকিস্তানের গভীর ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট ভূমিকা এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণেরও উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, লস্কর-ই তইবা ও TRF এই হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও পালন করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, এই হামলার মূল চক্রী ছিল লস্কর ই তইবার শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাট। তদন্তে তার সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করেছে NIA। এছাড়াও, এই চার্জশিটে অন্য তিন পাকিস্তানি জঙ্গির নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সুলেমান শাহ, হাবীব তাহির আকা জিব্রান ও হাজমা আফগানি নামে ওই ৩ জঙ্গিকে গত জুলাইতেই শ্রীনগরে এনকাউন্টারে নিকেশ করেছে সেনা।
চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) ২০২৩, অস্ত্র আইন ১৯৫৯ এবং বেআইনি কার্যকলাপ আইন, ১৯৬৭-এর সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, আরও দুই সন্দেহভাজন-পারভাইজ আহমেদ ও বশির আহমেদের নামও চার্জশিটে জোড়া হয়েছে। এই দু’জনকে গত ২২ জুন NIA গ্রেফতার করেছিল। অভিযোগ রয়েছে, এরা পহেলগাঁও হামলায় জড়িত ৩ জঙ্গিকে আশ্রয় দিয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ২ অভিযুক্ত হামলায় জড়িত ৩ জঙ্গির পরিচয় ফাঁস করে দেয়।
কে এই সাজিদ জাট?
সাজিদ জাট ওরফে সৈফুল্লা, নুমি, নুমান, ওসমান হাবিব, সানি-সহ আরও বেশ কয়েকটি ছদ্মনামে অপারেশন চালাত। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাকে 'একক সন্ত্রাসবাদী' হিসেবে ঘোষণাও করা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থাগুলির সন্দেহ, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের লস্কর-ই-তইবার সদর দফতর থেকেই যাবতীয় কাজ চালাত। গোয়েন্দাদের অনুমান, TRF-এর অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গি নিয়োগ, অর্থ জোগান ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও বড় ভূমিকা ছিল সাজিদ জাটের।
২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা হামলা, ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে ভারতীয় বায়ুসেনার কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাসে জঙ্গি হামলার ঘটনাতেও এই সাজিদের হাত ছিল বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।