আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে ফের একবার পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিল ভারত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘নারী অধিকার ও সুরক্ষা’ বিষয়ক আলোচনায় পাকিস্তানের অভিযোগের উত্তরে ভারত স্মরণ করিয়ে দিল ইতিহাসের এক ভয়াবহ অধ্যায়। ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতা।
ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত পি. হরিশ পরিষদে বলেন, 'যে দেশ নিজের নাগরিকদের উপর বোমাবর্ষণ করে এবং গণহত্যা চালায়, সেই দেশ মানবাধিকারের নামে মুখ খোলার যোগ্য নয়।' তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন, '১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সরকারি নির্দেশে এবং পরিকল্পিতভাবে প্রায় ৪ লক্ষ মহিলাকে গণধর্ষণ করেছিল। অপারেশন সার্চলাইটের নামে তারা পরিচালিত করেছিল এক ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অভিযান।'
কাশ্মীর প্রসঙ্গে পাকিস্তানের চিরাচরিত অভিযোগেরও কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে হরিশ বলেন, 'প্রতি বছর পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মীর সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বক্তব্য দেয়। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, ছিল, আছে এবং থাকবে।'
পাকিস্তানি কূটনীতিবিদ সাইমা সালেম সভায় অভিযোগ করেছিলেন, কাশ্মীরি মহিলারা 'কষ্টের মধ্যে' আছেন। তাঁর সেই বক্তব্যের জবাবে ভারতীয় প্রতিনিধি বলেন, 'যে দেশ নারী, শান্তি ও নিরাপত্তার নামে কুমিরের কান্না কাঁদে, তারই সেনাবাহিনী ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটিয়েছে। পাকিস্তান নারী সুরক্ষার কথা বলার আগে নিজের অতীতের দিকে তাকাক।'
ভারত আরও জানায়, নারী অধিকার ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের রেকর্ড 'নিষ্কলঙ্ক ও অক্ষত।' বরং পাকিস্তান বারবার মিথ্যা প্রচার চালিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই অধিবেশনে ভারতের বক্তব্য শুধু কূটনৈতিকভাবে নয়, নৈতিকভাবেও পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে দেয়। ১৯৭১ সালের গণহত্যা ও নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতনের বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিসরে আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভারত স্পষ্ট বার্তা দিল, মানবাধিকারের বিষয়ে ভণ্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।