
কথায় আছে, বিপদে পড়লে শত্রুও পাশে দাঁড়ায়। তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সেই কথা খাটে না। প্রতিবেশির বিপদ দেখেও ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে রইল তারা। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরের কাছে প্রবল শিলাবৃষ্টির কবলে পড়েছিল ইন্ডিগো সংস্থার একটি উড়ান। যে উড়ানে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে পাঁচ সদস্যের তৃণমূল প্রতিনিধি দলও ছিল। ওই কঠিন পরিস্থিতিতে নেহাতই নিরুপায় হয়ে পাকিস্তানের সাহায্য চেয়েছিল ভারত। কিন্তু ভারতীয় উড়ান সংস্থাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করে পাকিস্তান। ব্যবহার করতে দিল না তাদের এয়ারস্পেস।
ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টির মধ্যে পড়ে নয়াদিল্লি থেকে শ্রীনগরগামী ফ্লাইটের পাইলট লাহোর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। টারব্যুল্যান্স এড়াতে পাকিস্তানি এয়ার স্পেসে ঢোকার অনুমতি চেয়ছিলেন। সে সময়ে এছাড়া বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার আর কোনও উপায় বের করতে পারেনি পাইলট।
সে সময়ে উড়ান ছিল অমৃতসরের আকাশে। পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকতে পারলে বিপদ কেটে যেত। কিন্তু লাহোর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ইন্ডিগোর উড়ানটিকে সেই অনুমতি দেয়নি। পাকিস্তানের প্রত্যাখ্যানের পর, পাইলট ওই ভয়ঙ্কর এয়ার টারব্যুল্যান্সের মধ্যেই পূর্ব নির্ধারিত পথে যেতে বাধ্য হন।
যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত শ্রীনগরে নিরাপদেই নেমেছিল উড়ানটি। অবতরণের পরে দেখা যায় বিমানটিতে শিলার আঘাতে বড়সড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। বরাতজোরে রক্ষা পান সমস্ত যাত্রী এবং ক্রু সদস্যরা।
বিমানের ২২৭ জন যাত্রীর মধ্যেই ছিলেন তৃণমূলের ৫ প্রতিনিধি। রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুইয়া এবং রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, মমতাবালা ঠাকুর, নাদিমুল হক ও সাগরিকা ঘোষ। তাঁরা শ্রীনগরে যাচ্ছিলেন। পাকিস্তানের গোলাবর্ষণের জেরে ওই এলাকায় সাধারণত মানুষের পরিস্থিতি দেখতেই তাঁদের এই সফর। কিন্তু যাত্রাপথে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা।
দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান। অন্য দিকে পাকিস্তানি বিমানগুলিকেও ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না নয়াদিল্লি। তবে বুধবার সন্ধ্যার দুর্ঘটনা ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করে। ২২৭ জন যাত্রীর প্রাণ যখন বিপন্ন তখন শত্রুতা ভুলে একটু মানবিকতা দেখাতেই পারত ইসলামাবাদ, মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।