দুজনের সম্পর্কের কথা জানত দুই পরিবারই। তবে ছোটোখাটো বিষয়ে সমস্যা লেগেই থাকত যুগলের। তার পরিণতি যে এমন হবে তার বিন্দুমাত্র আঁচ পাননি পরিবারের সদস্যরা। প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর আত্মঘাতী হলেন তরুণী। পেশায় তিনি একজন পাইলট। নাম সৃষ্টি তুলি। এই ঘটনার পর যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ গ্রেফতারও করে আদিত্য পণ্ডিত নামে যুবককে। ঘটনা মুম্বইয়ের।
বাণিজ্য নগরীর পোয়াই এক ভাড়া ফ্ল্যাটে থাকতেন সৃষ্টি। সেখানেই থাকতেন বছর পঁচিশের তরুণী। ভালোবাসতেন আদিত্যকে। দুজনের সম্পর্ক কতটা গভীর ছিল বা বিয়ের ঠিক হয়েছিল কি না সেই সম্পর্কে আভাস মেলেনি। কিন্তু তাঁরা মাঝে মাঝে একসঙ্গে থাকতেন ও ঘুরতে-বেড়াতে যেতেন। পুলিশ সূত্রে খবর, আদিত্য নামের সেই যুবক বারবার মানসিক হেনস্থা করত সৃষ্টিকে। তা নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। মৃতার পরিবারের তরফে সেই অভিযোগই করা হয়েছে থানায়।
সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটে। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলেন আদিত্য ও সৃষ্টি। সেখানে ওই যুবতী নন-ভেজ খাবার খাওয়ায় তাঁকে সবার সামনে অপমানজনক কথা বলেন আদিত্য। তা নিয়ে তাঁদের বচসা হয়। একটা সময় আদিত্য রেগে সেই স্থান ছেড়ে চলে যান।
আরও একবার ঝামেলা হয় রবিবার। সেদিন সন্ধেবেলা নিজের ফ্ল্যাটে ফেরেন সৃষ্টি। আদিত্য সেখানেই ছিলেন। দুজনের মধ্যে ফের অশান্তি হয়। এবারও আদিত্য পালিয়ে যান ফ্ল্যাট থেকে। রাত তখন একটা। তখন সৃষ্টি ফোন করেন আদিত্যকে। তাঁকে ফিরে আসার অনুরোধ করেন। জানিয়ে দেন, ফিরে না এলে আত্মহত্যা করবেন। সেই ফোন পেয়ে ফিরে আসেন আদিত্য। কিন্তু এসে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। ফ্ল্যাটের দরজার লক ভেঙে সৃষ্টিকে হাসপাতালে নিয়ে যান আদিত্য। তবে চিকিৎসকরা যুবতীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সোমবারের এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ এসে দেহ নিয়ে যায় ও ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় মর্গে। সেখানে আসেন মৃতার পরিবারের সদস্যরাও। তাদের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদিত্যের বিরুদ্ধে আত্নহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেন তদন্তকারীরা। তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়।
মঙ্গলবার আদিত্যকে কোর্টে তোলা হয়। তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে।