Su-57 যুদ্ধবিমান নিয়ে চুক্তির সম্ভাবনাআজ, শুক্রবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈঠকটি শুধুমাত্র কোনও বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা নয়, এর সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যিক খাতেরও একাধিক বিষয় নিয়ে হতে পারে আলোচনা। ফলে প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি এবং বিশেষজ্ঞরা ফোকাস সেট করেছেন এই বৈঠকের দিকে। অনুমান করা হচ্ছে, রাশিয়ান Su-57 যুদ্ধবিমান এবং S-500 নিয়ে কোনও চুক্তি হতে পারে নয়াদিল্লি ও মস্কোর সঙ্গে। প্রতিরক্ষা খাতের আর কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, জেনে নেওয়া যাক।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ভারতের ৩৬ শতাংশ অস্ত্র রাশিয়া থেকে এসেছে। অপারেশন সিন্দুরের সময়, রাশিয়ান S-400 সিস্টেম ৯৫ শতাংশ পাকিস্তানি ড্রোন ধ্বংস করেছিল। যা ভারতের ক্ষমতা সামনে তুলে ধরেছিল। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারত এখন আরও পাঁচটি S-400 ইউনিট কেনার পরিকল্পনা করছে। পাশাপাশি এর আপগ্রেড ভার্সন S-500 নিয়েও আলোচনা চলবে।
প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের ডিফেন্স পার্টনারশিপ দীর্ঘদিনের। এই বৈঠক সেই পার্টনারশিপকে আরও গভীর করবে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও জানিয়েছেন, এই বৈঠকে S-400 এবং Su-57 নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, রুশ প্রেসিডেন্ট গতকাল ৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে এসে পৌঁছন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। ৪ বছরের মধ্যে এটি পুতিনের প্রথম ভারত সফর । এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি এবং বাণিজ্যের মতো খাতে আলোচনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রতিরক্ষা খাতে কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে?
Su-57 যুদ্ধবিমান: রাশিয়ার Su-57 একটি বিশেষ যুদ্ধবিমান। এটি আমেরিকান F-35 এর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে পারে। এতে সুপারক্রুজ, উন্নত রাডার এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের বিমান বাহিনীর ঘাটতি পূরণের জন্য কমপক্ষে দুটি স্কোয়াড্রন (প্রায় ৮৪টি জেট) প্রয়োজন।
দাম: প্রতি জেট প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বিশেষ বিষয় হল, রাশিয়া ১০০% প্রযুক্তি ভারতকে দিতে ইচ্ছুক। এরফলে এগুলি ভারতেও তৈরি করা যাবে।
ক্রেমলিনের দাবি "SU-400 বিশ্বের সেরা ফাইটার। আমরা ভারতের সঙ্গে যৌথ উৎপাদন চাই। যদি চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়, তাহলে এই ডিলের ভ্যালু ৭৪ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।"
এস-৫০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: হাইপারসনিক আক্রমণের জবাব
S-500 এর পুরনো ভার্সন S-400 এর চেয়েও উন্নত। এটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে ধ্বংস করতে সক্ষম। এটির পাল্লা রয়েছে ৬০০ কিলোমিটার।
ভারত চাইছে S-500 নিয়ে ৫.৪ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি। যার মধ্যে ৬০ শতাংশ প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত। রাশিয়ার আলমাজ-অ্যান্টে কোম্পানির সঙ্গে এই অস্ত্রটি যৌথ উৎপাদনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এটি ঘোষণা করা হলে, ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
এছাড়াও, S-400 আপগ্রেড এবং আরও আমদানি, নতুন ৮০০ কিলোমিটারে পাল্লা বিশিষ্ট ব্রহ্মোস মিসাইল, Su-30MKI-এর ১০০টি জেটে বড় ধরনের আপগ্রেড, স্প্রট লাইট ট্যাঙ্ক, প্যান্টসির সিস্টেম ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।