প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফরের মাঝেই তাঁর বিমানে জঙ্গি হামলার হুমকি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার, মুম্বই পুলিশের কন্ট্রোল রুমে এক ব্যক্তি ফোন করে দাবি করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর বিমানে জঙ্গি হামলা হতে পারে। এই ফোন আসার পরই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে একজন সন্দেহভাজনকে চেম্বুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল?
মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে তাদের কন্ট্রোল রুমে ফোন আসে। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি জানান, বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রীর বিমানে বোমা বিস্ফোরণ হতে পারে। খবর পাওয়ার পরই পুলিশ গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকেও সতর্ক করা হয়। দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মুম্বইয়ের চেম্বুর এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তির মানসিক অবস্থা সন্দেহজনক
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি মানসিকভাবে স্থিতিশীল নন। তাঁর উদ্দেশ্য কী ছিল, তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, এটি হয়তো মিথ্যা হুমকি ছিল। তবুও বিষয়টিকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না প্রশাসন।
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর ও নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ
প্রধানমন্ত্রী মোদী বর্তমানে বিদেশ সফরে রয়েছেন। সোমবার তিনি ফ্রান্স সফর শুরু করেন। মঙ্গলবার তিনি প্যারিসে এআই (Artificial Intelligence) সম্মেলনে অংশ নেন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভাল-মন্দ দিকগুলি নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁর সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন এবং বুধবার মার্সেইতে ভারতীয় সেনাদের যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। ফ্রান্স সফর শেষ করেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রওনা হবেন।
আগেও এসেছে মোদীর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি
এই ধরনের হুমকি নতুন কিছু নয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মুম্বই ট্রাফিক পুলিশের কন্ট্রোল রুমেও একটি সন্ত্রাসবাদী হামলার হুমকি ফোন আসে, যেখানে আইএস যোগের কথাও বলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এর আগেও একাধিকবার মোদীর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি এসেছে এবং প্রতিবারই পুলিশ সতর্কতা বাড়িয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদার, চলছে তদন্ত
জঙ্গি হুমকি ফোনের পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বই পুলিশসহ দেশের সমস্ত গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিশেষ নিরাপত্তা দলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিমান ও তাঁর সফর সংক্রান্ত সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। তদন্তের পরই স্পষ্ট হবে, এটি সত্যিকারের জঙ্গি ষড়যন্ত্র নাকি মানসিক ভারসাম্যহীন কারও উস্কানি।