আরজি কর-কাণ্ডের নাম করেননি। আরও একবার নারী নির্যাতনের মামলায় দ্রুত বিচারের প্রসঙ্গ এল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জেলা আদালতের বিচারকদের কাছে আবেদন করেন। তাঁর মতে,'দ্রুত বিচার হলে নারী তথা সার্বিকভাবে সমাজের মধ্যে তৈরি হবে নিরাপত্তাবোধ'।
দিল্লির 'ভারত মণ্ডপম'-এ সুপ্রিম কোর্টের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ দিন বলেন,'নারী নির্যাতন, শিশুদের নিরাপত্তা গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দেশে একাধিক কঠোর আইন আনা হয়েছে। কিন্তু সেই আইনগুলিকে আরও সক্রিয় করে তোলা দরকার। মহিলাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের ঘটনায় যত দ্রুত রায় দেওয়া যাবে, তত বেশি নিশ্চিত হবে দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা'।
বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সেই সমস্যা নিরসনে তাঁর সরকার কী করেছে, তার খতিয়ানও তুলে ধরেন মোদী। বলেন,'বিচারের যাতে দেরি না হয় সেজন্য গত এক দশকে নানা ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১০ বছরে বিচারব্যবস্থা সংক্রান্ত পরিকাঠামোয় খরচ করা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। গত ২৫ বছরে যে খরচ হয়েছে তার ৭৫ শতাংশই হয়েছে শেষ ১০ বছরে'।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে পাওয়া গিয়েছিল তার ব্লুটুথ হেডফোন। সিসিটিভিতেও দেখা গিয়েছে সঞ্জয়কে। এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই। নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অন্যদিকে, বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে নাগরিক সমাজ। রাস্তায় রাস্তায় মহিলারা প্রতিবাদ করছেন। বিরোধী দলগুলিও নিশানা করেছে রাজ্যের শাসক দলকে। ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের আইন আনার দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেজন্য় দুবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন। ২২ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন আনার দাবি করেছিলেন। তার পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্র। জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিলেও ১০টি ফাস্ট ট্র্যাক এখনও খোলা হয়নি। তার পাল্টা রাজ্যে পকসো আইনে দ্রুত বিচারের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা।