দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে একটা কারণে কখনওই ক্ষমা করতে পারেননি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। কী সেই কারণ? সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কংগ্রেস যে ভাবে নির্বাচনী যুদ্ধে ধাক্কা খাচ্ছে, এই আবহে শতাব্দী প্রাচীন দলের অন্দরের কিস্সা প্রকাশ্যে এল। তা-ও আবার প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়ের বইয়ের হাত ধরে। সম্প্রতি শর্মিষ্ঠার বই 'প্রণব, মাই ফাদার: দ্য ডটার রিমেম্বার্স'-এ আরও এক তথ্য প্রকাশ্যে এল। যা ঘিরে হইচই পড়ে গিয়েছে।
সোনিয়াকে একটি কারণে কখনওই ক্ষমা করতে পারেননি প্রণব। কী সেই কারণ? বইয়েতে প্রণব-কন্যা সেই কারণই তুলে ধরেছেন। লিখেছেন, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাওয়ের সঙ্গে প্রণব খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। নরসিমার মৃত্যুর পর একটা ঘটনা প্রণবকে কুঁড়ে খেয়েছিল। প্রয়াণের পর নরসিমার দেহ এআইসিসি-র সদর দফতরে আনতে দেননি সোনিয়া। যা পীড়া দিয়েছিল প্রণবকে। আর এই কারণেই ইন্দিরার পুত্রবধূকে কখনওই ক্ষমা করতে পারেননি প্রণব। বইয়ে শর্মিষ্ঠা লিখেছেন যে, এই ঘটনায় খুবই লজ্জাবোধ করতেন প্রণব। তিনি বলতেন যে, এই ঘটনা সোনিয়া এবং তাঁর সন্তানদের জন্য খুবই লজ্জাজনক।
বইয়ে শর্মিষ্ঠা আরও উল্লেখ করেছেন যে, এই ঘটনার কথা অনেক বার তাঁকে বলেছেন প্রণব। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির ডায়েরিতেও এ কথা লেখা রয়েছে। পরে ২০২০ সালে নরসিমহার ১০০ বছর জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সময় প্রণব বলেছিলেন যে, এখন সোনিয়া গান্ধী এবং মনমোহন সিংহ নরসিমহার অবদানের কথা বলছেন। শর্মিষ্ঠা বইয়ে লিখেছেন, তাঁর বাবা প্রায়ই বলতেন যে, নরসিমহার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেছে গান্ধী পরিবার। আর এর জন্য সোনিয়াকেই দায়ী করেছেন তিনি। সেই কারণেই সোনিয়াকে কখনওই মাফ করতে পারেননি প্রণব।
এই বই নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে প্রণব-কন্যা দাবি করেছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কিছু আচরণ মন:পূত ছিল না প্রণবের। ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার অধ্যাদেশ এনেছিল। সেই অধ্যাদেশ ছিঁড়ে দিয়েছিলেন রাহুল। সোনিয়া-পুত্রের এ হেন আচরণে অসন্তুষ্ট ছিলেন প্রণব। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই সোনিয়া প্রসঙ্গে প্রণবের এ হেন অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যে এল।