লোকসভা ভোটের আগে সোমবার ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শেষ জবাবি ভাষণ। সেই ভাষণেই ফের বাংলার টাকা উদ্ধারের প্রসঙ্গকে উত্থাপন করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর জমানায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি কতটা সক্রিয় ভাবে তদন্ত করেছে, সেই উদাহরণ দিতে গিয়েই এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, এই ব্যাপারে সরাসরি তিনি কোনও নাম করেননি।
এই ভাষণের মধ্যেই বিরোধী বেঞ্চে বসে থাকা কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর দিকেও প্রশ্ন ছুড়ে দেন নরেন্দ্র মোদী। জানতে চান, বাংলা থেকে এসেছেন, কখনও টাকার পাহাড় দেখেছেন ? প্রধানমন্ত্রী একটি তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘‘পিএমএলএ-তে (আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইন) আগের চেয়ে দ্বিগুণ মামলা করেছি আমরা। কংগ্রেসের সময় ইডি পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল। আর আমাদের কার্যকালে ইডি এক লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।’’ বলেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মোদীর নির্ঘোষ, ‘‘দেশকা লুটা হুয়া মাল দেনা হি পড়েগা (দেশ থেকে লুট করা টাকা ফেরত দিতেই হবে)।’’ সংসদে ওই কথা বলার সময় বহরমপুরের সাংসদ তথা কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরই মাল ধরা পড়ে দেখা যায়, নোটের স্তূপ। টাকার পাহাড় জমে গিয়েছে। আর অধীরবাবু... আপনি তো বাংলা থেকে এসেছেন। টাকার স্তূপ দেখেছেন।’’
ইডি-সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে দিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে বিজেপি, এই অভিযোগ প্রায় শোনা যায় বিজেপি বিরোধী দলগুলিতের নেতা-নেত্রীদের মুখে ৷ এই নিয়ে সোমবার পালটা তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ বিরোধীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যে যত অভিযোগ করছে করুক, দেশকে লুটতে দেব না ৷ যা লুটে নেওয়া হয়েছে, তা ফেরত দিতে হবে ৷’’
নিজের জবাবি ভাষণে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি দুষেছেন কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে। অভিযোগ করেছেন, এত বছর ধরে দেশের উন্নতি নয়, দেশবাসীকে লুঠেছেন কংগ্রেস নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ওঁদের সময় এজেন্সি শুধু রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হত ৷ এছাড়া তাদের কোনও কাজ করতে দেওয়া হত না ৷’’ এর পর তিনি ইউপিএ ও এনডিএ সরকারের আমলের একটা তুল্যমূল্য বিচার তুলে ধরেন ৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন দেখুন ওদের সময় কী হয়েছিল ? পিএমএলএ আইনের অধীনে আমরা আগের তুলনায় দ্বিগুন বেশি মামলা দায়ের করেছি ৷ কংগ্রেসের সময় ইডি ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল ৷ আমাদের সময় ইডি ১ লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ দেশের লুট করা সম্পত্তি ফেরত দিতেই হবে ৷’’
তিনি বিভিন্ন নেতার বাড়ি থেকে অর্থ উদ্ধারের প্রসঙ্গ তোলেন ৷ সেই প্রসঙ্গেই পশ্চিমবঙ্গের কথা উল্লেখ করেন ৷ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘অধীরবাবু তো বাংলার, উনি তো নোটের পাহাড় দেখেছেন... ৷’’ এর পর এই নিয়ে সমবেতভাবে বিরোধীদের আক্রমণ করেন ৷ মোদি বলেন, ‘‘...কার কার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে, কোন কোন রাজ্যে পাওয়া গিয়েছে ৷ দেশ এই নোটের পাহাড় দেখে দেখে চমকে গিয়েছে ৷ কিন্তু জনতাকে আপনি বোকা বানাতে পারবেন না ৷ জনতা দেখছে ৷’’