Psycho killer poonam: 'সুন্দর বাচ্চাদের ঘেন্না করি', পুলিশকে শিউরে ওঠা স্বীকারোক্তি বিকারগ্রস্থ সিরিয়াল কিলার পুনমের

হরিয়ানার পানিপথ জেলার নৌলথা ও সিওয়াহ গ্রামে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। তিন বছরের পুত্র সন্তান সহ দুবছরে চারটি শিশু হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষিত, শান্ত, সংযত ও বাহ্যিকভাবে স্বাভাবিক এক মহিলা পুনমের বিরুদ্ধে। ঘটনাগুলোর নেপথ্যে রয়েছে এক বিকৃত মানসিকতা, লুকোনো ঘৃণা এবং চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি, যা তদন্তকারীদেরও স্তব্ধ করে দিয়েছে।

Advertisement
'সুন্দর বাচ্চাদের ঘেন্না করি', পুলিশকে শিউরে ওঠা স্বীকারোক্তি বিকারগ্রস্থ সিরিয়াল কিলার পুনমের
হাইলাইটস
  • হরিয়ানার পানিপথ জেলার নৌলথা ও সিওয়াহ গ্রামে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ।
  • তিন বছরের পুত্র সন্তান সহ দুবছরে চারটি শিশু হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষিত, শান্ত, সংযত ও বাহ্যিকভাবে স্বাভাবিক এক মহিলা পুনমের বিরুদ্ধে।

হরিয়ানার পানিপথ জেলার নৌলথা ও সিওয়াহ গ্রামে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। তিন বছরের পুত্র সন্তান সহ দুবছরে চারটি শিশু হত্যার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষিত, শান্ত, সংযত ও বাহ্যিকভাবে স্বাভাবিক এক মহিলা পুনমের বিরুদ্ধে। ঘটনাগুলোর নেপথ্যে রয়েছে এক বিকৃত মানসিকতা, লুকোনো ঘৃণা এবং চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি, যা তদন্তকারীদেরও স্তব্ধ করে দিয়েছে।

সাইকো কিলার হয়ে ওঠার গল্প: 'আমি সুন্দর বাচ্চাদের ঘৃণা করি', পুলিশকে বলেছে পুনম
৩২ বছর বয়সী পুনম এমএ ও বি.এড. ডিগ্রিধারী, পরিবার ও প্রতিবেশীদের কাছে বুদ্ধিমতী ও শান্ত স্বভাবের মেয়ে বলেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু পুলিশের জেরা চলাকালীন পুনমের মুখে বেরিয়ে আসে এক শীতল সত্য, 'আমি সুন্দর বাচ্চাদের ঘৃণা করি।' হিংসা, ঈর্ষা আর নিস্তব্ধ আক্রোশে তৈরি এই মনস্তত্ত্ব কবে জন্ম নিল, পরিবারই বলতে পারে না। বিয়ের আগে পুনমকে সবাই স্বাভাবিকই জানত। কিন্তু বিয়ের পর যেন তার ভেতরে অন্য কেউ বাসা বাঁধল, এমনটাই বলছেন স্বজনেরা।

প্রথম দুটি খুন: ঈশিকা এবং নিজের ছেলে শুভমকে হত্যা
২০২৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। বাড়িতে অতিথি, আনন্দ, ব্যস্ততা...। সেই জটলার মধ্যেই ১১ বছরের ঈশিকাকে একা পেয়ে পুনম তাকে জলের ট্যাঙ্কে ডুবিয়ে হত্যা করে। কিন্তু অপরাধ ঢাকতে সে নেমে যায় আরও নৃশংস পথে, নিজের তিন বছরের ছেলে শুভমকেও একইভাবে হত্যা করে, যাতে কেউ সন্দেহ না করে। পরিবার দুটি মৃত্যুকেই দুর্ঘটনা ভেবে মান্য করে। কে-ই বা সন্দেহ করবে যে একজন মা নিজের শিশুকে হত্যা করতে পারে?

তৃতীয় ও চতুর্থ খুন: জিয়া ও বিধি
চলতি বছরের ১৮ অগাস্ট, সিওয়াহ গ্রাম। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে পুনম আবারও শিকার খুঁজে পায়। একটি ছোট্ট মেয়ে জিয়া। গবাদি পশুর খোঁয়াড়ে নিয়ে জলে ডুবিয়ে শেষ করে তার জীবন। পরিবারের সন্দেহ জাগলেও পুনম কান্নায় ভেঙে পড়ে, নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। পরিবারের চাপে সেদিন অভিযোগও হয় না। কিন্তু সত্য বেশিদিন চাপা থাকে না। ১ ডিসেম্বর যখন ছবছরের বিধির মৃত্যু হয় একইভাবে, তখন সবকিছু ভেঙে পড়ে। স্টোররুমে নিয়ে গিয়ে জলে ডুবিয়ে মেরে ফেলে সে শিশুটিকে। এবার আর আড়াল সম্ভব হয়নি। খুলে যেতে থাকে এক এক করে সব গোপন রহস্য।

Advertisement

পুনমের ভাতৃবধূ, যার মেয়ে বিধিকে সে হত্যা করেছে, এখন তিনি পুনমের দুবছরের ছেলেকে দুধ খাইয়ে মানুষ করছেন। একদিকে এক মা নিজের সন্তানের ঘাতক, অন্যদিকে আরেকজন মা ঘাতকের সন্তানের রক্ষক। বিরল নির্মমতা আর মানবতার মিশ্র ছবি।

পুনমের পরিবারের ব্যাখ্যা: 'বিয়ের আগে সে পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল'
পুনমের মা সুনীতা দেবী বলেন, 'বিয়ের আগে ওর মধ্যে কোনও সমস্যা দেখিনি। যদি কিছু থাকত, চিকিৎসা করাতাম। এখন বুঝতে পারছি, বিয়ের পর ও আর আগের মতো ছিল না।' স্বজনেরাও বলেন, কখনও-কখনও পুনম এমনভাবে কথা বলত যেন অন্য কেউ তার শরীরে ঢুকে পড়েছে। একবার সে বিধির মুখে গরম চা ছুঁড়ে দিতেও গিয়েছিল। তখনও পরিবার কিছু টের পায়নি।

পুনমের স্বামী নবীন বলেন, 'আমি কখনও ভাবিনি সে এমন কাজ করতে পারে। যদি করে থাকে, তাহলে সেই অনুযায়ী শাস্তি হওয়া উচিত।' বিধির দাদার অভিযোগ, 'এখন বুঝতে পারছি… পুনম একবার বিধির মুখে গরম চা ঢালতে গিয়েছিল। আমরা ভুল বুঝেছিলাম।' বর্তমানে পুনমের দুই বছরের ছেলেকে বিধির মা-ই লালন করছেন। 

পুলিশের পর্যবেক্ষণ: মনোরোগ ও বিকৃত আচরণের স্পষ্ট ছাপ
পানিপথ পুলিশের এসপি ভূপেন্দ্র সিং জানান, পুনমের আচরণে গভীর মনোরোগের প্রবণতা, ঈর্ষা এবং অদ্ভুত মানসিক বিকৃতি দেখা গেছে। সুন্দর শিশুদের প্রতি ঘৃণাই তাকে ঠেলে দেয় হত্যার দিকে। এমনটাই প্রাথমিক ধারণা।

 

POST A COMMENT
Advertisement