দিল্লির ব্যবসায়ী পুনীত খুরানার আত্মহত্যার ঘটনায় সামনে এল নয়া তথ্য। গত ৩১ ডিসেম্বর দিল্লির কল্যাণ বিহার এলাকায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ব্যবসায়ী। স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ করেন তিনি। ২০১৬ সালে মনিকা পাহওয়ার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তারপর দুজনেই বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। এরপরই ব্যবসার মালিকানা নিয়ে অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। তারপরই আত্মহত্যা। দাবি করেছে পুনীতের পরিবার। এই ঘটনায় ২ কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে বিরোধও প্রকাশ্যে এসেছে।
পুনীতের আত্মহত্যা
৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টে। নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন পুনিত খুরানা নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেহ উদ্ধার করে। এরপর পুলিশ নিহতের ফোন ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করে। তারপর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এখনও কোনও এফআইআর নথিভুক্ত হয়নি।
আত্মহত্যার আগে স্ত্রী-র সঙ্গে ঝগড়া পুনীতের
আত্মহত্যার প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে, রাত ৩ টে নাগাদ পুনীত তাঁর স্ত্রী মনিকাকে ফোন করেছিলেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, দুজনের মধ্যে সেই রাতে ঝামেলা হয়। স্ত্রী-র সঙ্গে ব্যবসা নিয়ে কথা বলেছিলেন পুনীত। ফোনে মনিকা বলেন, 'তোমাকে মারধর করে হাত নোংরা করতে চাই না। তুমি তো ভিখারি। তোমার কাছে আমি কি চেয়েছি?' এই ফোন করার সময় মনিকা অভিযোগ করেন, পুনীত অন্য মেয়েদের সঙ্গে লুকিয়ে দেখা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, পুনীত এবং মনিকা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন। তাঁরা আলাদাভাবে থাকছিলেন। কিন্তু সেই রাতের কথোপকথনে মনিকা বলেন, তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের পথে হাঁটবেন ঠিকই তবে ব্যবসার অংশীদারিত্ব চান। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এই আত্মহত্যার ঘটনাটি ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। পুনীতের পরিবারের অভিযোগ,আলাদা থাকা সত্ত্বেও পুনীতের কাছে নিজের ভাগ দাবি করতেন মানিকা। হেনস্থা করতেন।
পুনীতের পরিবারের আরও অভিযোগ, মণিকার বাবা জগদীশ পুনীতকে ২ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি অস্বীকার করেন। প্রমাণ হিসাবে পুনীতের পরিবার ১২ অক্টোবর ২০২৩ সালের একটি ভিডিও ক্লিপও পুলিশকে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই সব কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তারপরই আত্মহত্যা করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মডেল টাউনের বাসিন্দা মানিকা পাহওয়াকে বিয়ে করেন পুনিত। প্রথম দিকে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও পরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এরপর মনিকা ও পুনীত আলাদা থাকতে শুরু করেন। দুজনে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। এমন তথ্যও সামনে আসছে যে, বিয়ের আগে থেকেই পুনীত ও মনিকা একে অপরকে চিনতেন। দুজনে একসঙ্গে একটা ক্যাফে চালাতেন। পরে যদিও তা বন্ধ হয়ে যায়।