এই বাজেটে মধ্যবিত্তের বুকে-পিঠে ছুরি মারা হয়েছে। লোকসভায় বাজেটের সমালোচনা করে এমনটাই বললেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, 'মধ্যবিত্তরা এই বাজেটের আগে পর্যন্তও মোদিজীকে সমর্থন করতেন। কোভিডের সময় প্রধানমন্ত্রীর কথায় ওঁরা খুব থালা বাজিয়েছিলেন। আর তারপর মোদীজি বললেন মোবাইলের আলো জ্বালান। সেটাও তাঁরা করলেন। এবার সেই মধ্যবিত্তের পিঠে আর বুকে আপনার ছোড়া মারলেন।'
দুই ছুরিকাঘাত
রাহুল গান্ধী এদিন বলেন, 'মধ্যবিত্তের পিঠে আর বুকে আপনারা ছোড়া মারলেন। লং টার্ম কর বাড়িয়ে ১০ থেকে ১২% করলেন। শর্ট টার্মকে ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০% করলেন।'
'একবিংশ শতাব্দীতে নতুন চক্রব্যূহ...'
এদিন রাহুল গান্ধী লোকসভায় কৃষকদের সমস্যা, প্রশ্নপত্র ফাঁস, বাজেট এবং কর বৃদ্ধির ইস্যুতে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই দেশে একটি ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই ভয় সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিজেপির জন্য মানুষ ভীত, মন্ত্রীরা ভীত এবং দেশের কৃষকরা ভীত।'
এরপরেই মহাভারতের উদাহরণ তুলে ধরে, অভিমন্যু-চক্রবূহ্যের সঙ্গে সমগ্র পরিস্থিতির তুলনা করেন রাহুল। কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, 'চক্রব্যুহে অভিমন্যুকে হত্যা করা হয়েছিল... আমি চক্রব্যূহ নিয়ে গবেষণা করে জানতে পেরেছি যে, এর আরেকটি নাম রয়েছে - পদ্মব্যুহ, যা একটি পদ্ম ফুলের আকারে।'
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, 'একবিংশ শতাব্দীতে একটি নতুন চক্রব্যূহ এসেছে, সেটিও পদ্মের আকারে। অভিমন্যু যে চক্রব্যূহে আটকা পড়েছিলেন সেই একই ঘটনা ঘটছে ভারতের মানুষের সঙ্গে। ভারতের যুবক, কৃষক, মা-বোন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও একই কাজ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই চক্রব্যূহের প্রতীক বুকে পরে থাকেন।'
মহাভারতের চক্রব্যূহ দ্রোণাচার্য, কর্ণ, কৃপাচার্য, কৃতবর্মা, অশ্বধামা এবং শকুনি- এই ৬ জন লোক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। অন্যদিকে আজও ৬ জন এটি নিয়ন্ত্রণ করছে, এর মধ্যে নরেন্দ্র মোদীজি, অমিত শাহজি, মোহন ভগবতজি, অজিত দোভালজি, আম্বানি এবং আদানি জি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। .
'কর সন্ত্রাস বন্ধ করতে...'
রাহুল গান্ধী বলেন, 'কর সন্ত্রাস বন্ধ করার বিষয়ে সরকার বাজেটে কিছুই দেয়নি। মধ্যবিত্ত লোকের বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।'
বিরোধী দলনেতা বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম সরকার বাজেটে কৃষকদের জন্য ন্যূনতম দামের সুযোগ দিতে পারবে। কিন্তু ইন্ডিয়া একদিন এই সংসদেই গ্যারান্টি MSP পাশ করবে। মধ্যবিত্তরা এই বাজেটের আগে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করতেন। কোভিডের সময় প্রধানমন্ত্রীর কথায় ওঁরা খুব থালা বাজিয়েছিলেন। আর তারপর মোদীজি বললেন মোবাইলের আলো জ্বালান। সেটাও তাঁরা করলেন। এবার সেই মধ্যবিত্তের পিঠে আর বুকে আপনারা ছোড়া মারলেন। লং টার্ম কর বাড়িয়ে ১০ থেকে ১২% করলেন। শর্ট টার্মকে ১৫ থেরে বাড়িয়ে ২০% করলেন।'