পুতিনের ভারত সফর নিয়ে রাহুল গান্ধীদুদিনের ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক হবে। ভারত-রাশিয়া একাধিক চুক্তি হচ্ছে। পুতিনের সফর নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করলেন কংগ্রেস নেতা তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। রাহুলের দাবি, বিদেশি রাষ্ট্রনেতারা ভারতে এলে, বিরোধীদের থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। বিরোধী নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। এই রকম অতীতের সরকারে ছিল না। মনমোহন সিং বা বাজপেয়ী সরকারের আমলে ছিল না। এখন সেই সব রীতি তুলে দেওয়া হয়েছে।
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ভারতের এই সংসদীয় রীতি অনেক পুরনো। সেই পুরনো রীতি এখন ভেঙে ফেলেছে বর্তমান সরকার। বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বিরোধী দলনেতা বা নেতাদের সাক্ষাত্ করতে দেওয়া হয় না। বহু বছর ধরে চলে আসা এই সাংসদীয় রীতি এখন সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফর শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে রাহুল বলেন, 'আগে এটি নিয়ম ছিল। বাজপেয়ীজি বা মনমোহন সিং এর আমলেও বিদেশি প্রতিনিধি দল সরকারের পাশাপাশি বিরোধী নেতাদের সঙ্গেও দেখা করতেন। কিন্তু এখন বিদেশি নেতারা এলে সরকার তাদের বলে দেয় বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করতে। আমরাও তো ভারতের প্রতিনিধিত্ব করি, শুধু সরকারই তো নয়।'
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রক সচেতনভাবেই বিদেশি প্রতিনিধিদের বিরোধীদের থেকে দূরে রাখছে। তাঁর কথায়, 'এটা নিরাপত্তাহীনতা এবং ভয় থেকেই হচ্ছে। ওরা চায় না বিরোধী দল ভারতের বিষয়ে ভিন্ন মত তুলে ধরুক।'
পুতিন দিল্লিতে, মোদীর সঙ্গে ব্যক্তিগত ডিনার
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটেয় দিল্লিতে পৌঁছবেন। পৌঁছনোর পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ব্যক্তিগত নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গত বছর মোদীর মস্কো সফরের সময় পুতিনও ব্যক্তিগত রাত্রিভোজের আয়োজন করেছিলেন, সেই সৌজন্যই এবার ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সরকারের সঙ্গে পুতিনের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে রক্ষাব্যবস্থা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ভারত–রাশিয়া বাণিজ্যকে বাইরের চাপ থেকে সুরক্ষা দেওয়া, এবং ছোট মাপের পরমাণু রিয়্যাক্টর নিয়ে যৌথ উদ্যোগ, এই বিষয়গুলির উপর মূলত আলোচনা হওয়ার কথা। এই সব কিছুই হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন ভারত–আমেরিকা সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে স্পষ্টভাবে কিছুটা শীতল হয়ে উঠেছে বলেই কূটনৈতিক মহলে মত।
‘৭০ বছরের সম্পর্ক’, ইতিহাস মনে করাল কংগ্রেস
এ দিন কংগ্রেসও ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ তুলে ধরেছে। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়ারাম রমেশ বলেন, ভারত–রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) বন্ধুত্ব আজকের নয়। তিনি বলেন, 'ঠিক ৭০ বছর আগে ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের দুই শীর্ষ নেতা নিকোলাই বুলগানিন এবং নিকিতা ক্রুশ্চেভ ১৯ দিনের জন্য ভারত সফরে এসেছিলেন। ১৮ থেকে ৩০ নভেম্বর এবং আবার ৭ থেকে ১৪ ডিসেম্বর। তার আগে ছ’মাস আগে জওহরলাল নেহরুও মস্কো সফরে গিয়েছিলেন।' জয়ারাম রমেশ জানান, সেই সফরই পরে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ও শিল্প সংস্থার ভবিষ্যৎ গঠনে ভূমিকা রাখে। মিগ বিমান HAL-এ তৈরি হতে শুরু করে, প্রযুক্তি হস্তান্তর হয়। পাশাপাশি ওএনজিসি, আইডিপিএল–এর মতো বহু সরকারি সংস্থা তৈরি হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে বেসরকারি শিল্পকেও পথ দেখায়।