Railway Minister Ashwini Vaishnaw: লাগাতার রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে প্রবল হট্টগোল বিরোধীদের। বিরোধীদের দাবি রেল দুর্ঘটনাগুলির দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এতে চটে যান রেলমন্ত্রী। এমনকী কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়াতেও মিথ্য়া প্রচার করছে বলে দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী।
সংসদে কংগ্রেসের অভিযোগের জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, "আমরা কেবল রিল বানাই তা নয়, কাজও করি।" রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বিপক্ষ দলের হইচই এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন যাঁরা এখানে চেঁচামেচি করছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করা উচিত, ক্ষমতায় থাকাকালীন ৫৮ বছরে তাঁরা এক কিলোমিটারও অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন কেন (ATP) লাগাননি?
সংসদে বক্তব্য রাখার সময় সাংসদদের প্রবল হইচইয়ে ক্ষুব্ধ রেলমন্ত্রী। এই সময়ের মধ্যে বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈষ্ণব হাঙ্গামা করতে থাকা বিপক্ষ সংসদদের বলেন, "চুপ করুন, বসুন, যে কোনও বিষয়েই আপনারা কথা বলতে শুরু করেন। এরপরে তিনি স্পিকারকে সম্বোধন করে বলেন এটা কী ধরনের পদ্ধতি? যে কোনও কথার মাঝখানে কথা বলছে।"
রেলমন্ত্রী বলেন, "আজ তাঁরা প্রশ্ন করার সাহস করছেন, কিন্তু যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী ছিলেন, দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান ০.২৪ থেকে কমে ০.১৯ এ হয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁরা সংসদে করতালি বাজাতেন এবং আজ যখন ০.১৯ থেকে কমে ০.০৩ হয়ে গিয়েছে, তখন তাঁরা অভিযোগ করে যাচ্ছেন।"
এভাবে কি দেশ চলবে প্রশ্ন বৈষ্ণবের?
অশ্বিনী বৈষ্ণব স্পিকারকে জিজ্ঞাসা করেন, এভাবে দেশ চলতে পারে? রেলমন্ত্রী অভিযোগ করেন, যে কংগ্রেস সোশ্যাল মিডিয়া ট্রল আর্মির মাধ্যমে মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, অযোধ্যা স্টেশনে একটা পুরনো দেওয়াল পড়ে যাওয়াতে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস হ্যান্ডেলে ওটা নিয়ে তথ্য নিয়ে প্রচার শুরু হয়। এই ধরনের মিথ্যা কথা প্রচার করলে কীভাবে দেশ চলবে? ২ কোটি প্যাসেঞ্জার ডেইলি যাতায়াত করেন। তাদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিতে চান কি?
রেলমন্ত্রী জানান, এই ধরণের ঘটনা আটকাতে কি পদক্ষেপ মন্ত্রকের?
সংসদে বলেন যে, দুর্ঘটনা রুখতে গোটা দেশে মানবহীন রেলওয়ে ক্রসিং করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে প্রত্যেক বছর কোনও না কোন স্কুল বাস একাধিক দুর্ঘটনায় মুখে পড়ত, সেই সমস্ত এলাকায় স্টেশনের পুরো কন্ট্রোল ইলেকট্রনিক ইনটারলকিং এর মাধ্যমে হয়। পৃথিবীর বড় দেশগুলিতে ১৯৮০ থেকে ৯০ দশকে এই লক লাগানো হয়েছিল। আমাদের এখানে ধীরগতিতে কাজ চলছিল। তিনি বলেছেন যে ২০১৪ সালে সরকারে আসার পরেই আমরা atp ডেভলপ করার সংকল্প নিই এবং ২০১৬-তে কবচ এর ট্রায়াল শুরু করি। কোভিড সত্বেও ২০২০-২১-এ এর এক্সটেন্ডেড ট্রায়াল শুরু হয়। তিনটি ম্যানুফ্যাকচারারকে চিহ্নিত করা হয় এবং ২০২৩-এ ৩ হাজার কিলোমিটারের প্রজেক্ট রোল আউট হয় এবং আজকে আমরা এই পরিস্থিতিতে পৌঁছেছি যেখানে আরও দুটি ম্যানুফ্যাকচার জুড়তে চলেছে। আমরা আট হাজারের বেশি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষিত করেছি।"
রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা ৯০০০ কিলোমিটারের টেন্ডার এই প্রসেসে রয়েছে। আমাদের প্রায় ৭০ হাজার কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্ক রয়েছে। এর চেয়ে অর্ধেক নেটওয়ার্কওয়ালা দেশের প্রায় ২০ বছর লেগেছে এটিপি ইনস্টল করতে। এতটুকু আশ্বাস দিতে পারি, কবচ ইনস্টল করতে আমরা কোনওরকম ভাবে পিছিয়ে আসবো না।
গত ১৫ দিনে ৮ বার দুর্ঘটনা ঘটেছে
আসলে বিপক্ষ লাগাতার হতে থাকা রেল দুর্ঘটনা নিয়ে রেলমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেছেন। তাঁদের বক্তব্য যখন এতগুলি দুর্ঘটনা ঘটছে তখন রেলমন্ত্রীর ইস্তফা দিয়ে দেওয়া উচিত। জানিয়ে দেওয়া যাক যে গত ১৫ দিনের ৮ বার রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। কেবল জুলাই মাসেই কথা যদি বলি তাহলে ১৮ জুলাই চন্ডিগড়-ডিব্রুগড় রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবং ৩১ জন জখম হন। ১৯ জুলাই গুজরাতের বালসাটে মালগাড়ি রেললাইন থেকে নেমে যায়। ২০ জুলাই উত্তরপ্রদেশের অমরোহাতে বারোটা কামরা রেললাইন থেকে সরে গিয়েছিল। ২১ জুলাই রাজস্থানের আলোয় মালগাড়ির তিনটি কামরা রেললাইন থেকে নামে। ২১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাটে মালগাড়ি লাইন থেকে নেমে যায়। ২৬ জুলাই অনুসার ভুবনেশ্বরে মালগাড়ি রেললাইন থেকে নেমে যায়। ২৯ জুলাই বিহারের সমস্তিপুরে বিহার সম্পর্কক্রান্তি রেল লাইনচ্যুত হয়। হাওড়া-মুম্বই যাত্রী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে।