উত্তরাখণ্ড হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত পাইলট রাজবীর সিং চৌহানের ‘তেরাভি’ অনুষ্ঠানের দিনেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর মা বিজয় লক্ষ্মী চৌহানের। ছেলের অকালমৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে, রাজস্থানের জয়পুরের শাস্ত্রী নগরের বাসভবনে মারা যান। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলের শেষকৃত্যের পর থেকেই বিজয় লক্ষ্মী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। মৃত্যুর কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁকেও দাহ করা হয়।
পেশায় প্রাক্তন সেনা পাইলট রাজবীর সিং চৌহান ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে অ্যারিয়ান এভিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডে যোগ দেন। ১৫ জুন ভোরে তিনি বেল ৪০৭ মডেলের একটি হেলিকপ্টার চালাচ্ছিলেন, যা কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশি যাওয়ার পথে গৌরীকুণ্ড সংলগ্ন বনাঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটিতে রাজবীর ছাড়াও ৬ জন যাত্রী ছিলেন। বিক্রম রাওয়াত, বিনোদ, তৃষ্টি সিং, রাজকুমার, শ্রদ্ধা এবং ১০ বছর বয়সী শিশু রাশি। দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটির সকল যাত্রী ও পাইলট প্রাণ হারান।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হেলিকপ্টারটি ভোর ৫টা ১৭ মিনিটে কেদারনাথ থেকে রওনা দেয়। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও উপত্যকায় নিম্ন দৃশ্যমানতার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে যায়, যা দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মাত্র ৬ সপ্তাহের ব্যবধানে এটি উত্তরাখণ্ডে পঞ্চম হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা, যা তীর্থযাত্রা চলাকালীন হিমালয় অঞ্চলে বিমান নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। দুর্ঘটনার পরই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, 'খারাপ আবহাওয়ার কারণে আজ সকালে একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়েছে। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। এই ঘটনার তদন্তে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে এবং ডিজিসিএ-র নিরাপত্তা বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
পাইলট রাজবীরের অভিজ্ঞতা ছিল কঠিন পার্বত্য এলাকায় বিমান চালনার ক্ষেত্রে। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু ও মায়ের পরপর প্রয়াণে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয় বাসিন্দারাও গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।