বেনারস তার অংসখ্য ঘাট এবং মন্দিরের জন্য পরিচিত। এখানে কাশী বিশ্বনাথ সহ এমন অনেক মন্দির রয়েছে যেগুলি কোনও না কোনও কারণে মানুষকে তাদের দিকে আকৃষ্ট করে। একইভাবে, বেনারসে এমন একটি মন্দির রয়েছে, যেটিতে কোনও দিনও আরতি হয় না, পুজো হয় না। তবুও এই মন্দির দেখতে ছুটে আসেন হাজার হাজার ভক্ত, পর্যটক।
এই মন্দিরকে ঘিরে অনেক কাহিনি রয়েছে। স্থানীয় লোকেরা একে কাশী করভাত বলে। একই সঙ্গে অনেকে এই মন্দিরকে মাতৃরুন মন্দির নামেও ডাকেন। কারণ, প্রায় ৩০০ বছর আগে কেউ নাকি তাঁর মায়ের ঘৃণা থেকে মুক্তি পেতে, মাতৃ ঋণ শোধ করতে এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু নির্মাণের সময় একাধিক ত্রুটির কারণে এই মন্দিরটি একপাশে হেলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: গিরগিটি যেন Spider-Man সেজেছে! বিচিত্র ছবিতে Viral টুইট
কেন এই মন্দিরে কখনও পুজো হয় না?
বেনারসের এই মন্দিরটি মণিকর্ণিকা ঘাটের কাছে দত্তাত্রেয় ঘাটে অবস্থিত। এ নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত রয়েছে। যাইহোক, অধিকাংশ স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন যে, কোনও এক অভিশাপের কারণে এখানে কেউ পুজো করেন না এবং এই মন্দিরটি জলের নিচে ডুবে যায়। তবে এ কথা স্থানীয়রা সকলেই জানেন যে, এই মন্দিরটি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এবং বছরে যখনই গঙ্গা নদীর জলের উচ্চতা বৃদ্ধি পায় তখনই এই মন্দিরটি জলের তলায় তলিয়ে যায়। এখন প্রশ্ন হল এই মন্দিরে কেন পুজো হয় না।
আরও পড়ুন: দামি ডিভোর্স! দুবাই প্রিন্সের থেকে ৫,৫৯১ কোটি টাকা পেলেন রাজকুমারী
স্থানীয়দের বিশ্বাস এই মন্দিরটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো এবং এই মন্দিরটি পিসার হেলানো টাওয়ারের মতোই একপাশে হেলে আছে। মন্দিরটি কতটা ঝুঁকে আছে তা আপনি দেখেই বুঝতে পারবেন। শত শত বছর ধরে এই মন্দিরটি একদিকে ৯ ডিগ্রি কাত হয়ে আছে। কখনও কখনও গঙ্গার জলের স্তর কিছুটা উঁচু হয়ে যায়। তখন নদীর জলে মন্দিরটির চূড়া পর্যন্ত ডুবে যায়। কিন্তু এত বছর ধরে নিয়মিত নদীর জলে আপাদমস্তক ডুবে গিয়েও এটি এখনও প্রায় অক্ষত রয়েছে।
এই মন্দির তৈরির ক্ষেত্রেও নান জনশ্রুতি রয়েছে। কেউ বলেন, এটি পঞ্চদশ শতকে নির্মিত হয়েছিল। 'ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ' অনুসারে, এই মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকে নির্মিত হয়েছিল। ব্রিটিশ রাজস্ব রেকর্ড অনুসারে, ১৮৫৭ সালে আমেথির রাজ পরিবারের কোনও এক সদস্য এই মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন।
এই মন্দির তৈরির অপর জনশ্রুতি অনুযায়ী, এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন মহারাণী অহিল্যাবাই হোলকার। কথিত আছে যে, তাঁর এক দাসী রত্না বাই মণিকর্ণিকা ঘাটের সামনে একটি শিব মন্দির নির্মাণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তারপরে তিনি নির্মাণের জন্য অহিল্যা বাইয়ের কাছ থেকে অর্থ ধার করেছিলেন। মন্দিরটি দেখে অহিল্যা বাই খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি রত্না বাইকে এই মন্দিরের নাম না দিতে বলেছিলেন, কিন্তু দাসী তার কথা না শুনে মন্দিরের নাম রাখেন রত্নেশ্বর মহাদেব। এতে অহিল্যা বাই রেগে গিয়ে অভিশাপ দেন।