নৌবাহিনীতে 'রোমিও', পাক-চিনের দুঃস্বপ্ন এই MH-60R হেলিকপ্টার

ভারতীয় নৌবাহিনী ধাপে ধাপে নিজের সামুদ্রিক ও বিমান শক্তি আরও মজবুত করে তুলছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটি বড় সংযোজন হল MH-60R ‘রোমিও’ বহুমুখী হেলিকপ্টারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড্রন নৌবাহিনীতে কমিশন করা হল। গোয়ার INS হানসা নৌ ঘাঁটিতে INAS ৩৩৫ (অস্প্রে) স্কোয়াড্রনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী।

Advertisement
নৌবাহিনীতে 'রোমিও', পাক-চিনের দুঃস্বপ্ন এই MH-60R হেলিকপ্টার
হাইলাইটস
  • ভারতীয় নৌবাহিনী ধাপে ধাপে নিজের সামুদ্রিক ও বিমান শক্তি আরও মজবুত করে তুলছে।
  • সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটি বড় সংযোজন হল MH-60R ‘রোমিও’ বহুমুখী হেলিকপ্টারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড্রন নৌবাহিনীতে কমিশন করা হল।

ভারতীয় নৌবাহিনী ধাপে ধাপে নিজের সামুদ্রিক ও বিমান শক্তি আরও মজবুত করে তুলছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটি বড় সংযোজন হল MH-60R ‘রোমিও’ বহুমুখী হেলিকপ্টারের দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড্রন নৌবাহিনীতে কমিশন করা হল। গোয়ার INS হানসা নৌ ঘাঁটিতে INAS ৩৩৫ (অস্প্রে) স্কোয়াড্রনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে. ত্রিপাঠী।

এই কমিশনিং ভারতীয় নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ অভিযানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ২০২০ সালে আমেরিকার সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে কেনা ২৪টি MH-60R হেলিকপ্টারের মধ্যে এটি দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ স্কোয়াড্রন। এর আগে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে কোচিতে প্রথম স্কোয়াড্রন INAS ৩৩৪ কমিশন করা হয়েছিল। এই হেলিকপ্টারগুলি নৌবাহিনীর সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধ, নজরদারি, ভূমি ও সমুদ্রপৃষ্ঠে আক্রমণ এবং অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের সক্ষমতা বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

MH-60R ‘রোমিও’: কী এই হেলিকপ্টারকে এত ভয়ংকর করে তোলে?
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মাল্টি-মিশন হেলিকপ্টারগুলির মধ্যে অন্যতম MH-60R ‘রোমিও’। লকহিড মার্টিন নির্মিত এই হেলিকপ্টার মার্কিন নৌবাহিনীরও প্রধান ভরসা। এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল, অত্যাধুনিক অস্ত্রভাণ্ডার: হেলফায়ার মিসাইল, মার্ক-৫৪ টর্পেডো, রকেট ও মেশিনগান।

উন্নত সেন্সর ও সোনার ব্যবস্থা: ডিপিং সোনার, সোনোবয় লঞ্চ সিস্টেম ও মাল্টি-মোড রাডার—যার সাহায্যে গভীর সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা শত্রু সাবমেরিন সহজেই শনাক্ত করা যায়।

আত্মরক্ষা প্রযুক্তি: ইনফ্রারেড কাউন্টারমেজার ও স্বয়ংক্রিয় সতর্কতা ব্যবস্থা, যা হুমকি টের পেলেই সক্রিয় হয়।
অপারেশনাল সুবিধা: ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট থেকে শুরু করে INS বিক্রমাদিত্য ও INS বিক্রান্তের মতো বিমানবাহী রণতরী থেকেও সহজে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে।

বহুমুখী ব্যবহার: সাবমেরিন শিকার, শত্রু জাহাজ আক্রমণ, সামুদ্রিক নজরদারি, অনুসন্ধান ও উদ্ধার, সব ক্ষেত্রেই সমান দক্ষ।

ভারত মহাসাগরে কৌশলগত গুরুত্ব
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (IOR) চিনা নৌবাহিনীর বাড়তে থাকা তৎপরতা ও পাক-চিন সাবমেরিন মোতায়েনের প্রেক্ষিতে MH-60R হেলিকপ্টারগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। নৌবাহিনীর আধিকারিকদের মতে, এই হেলিকপ্টারগুলি দূর থেকেই শত্রু সাবমেরিন ট্র্যাক করে আক্রমণ চালাতে সক্ষম, ফলে সমুদ্রে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের নিরাপত্তা বহুগুণ বেড়ে যাবে।

Advertisement

অপারেশন সিঁদুরের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎপর্য
২০২৫ সালের মে মাসে পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার জবাবে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ দেখিয়ে দিয়েছে আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে প্রযুক্তির গুরুত্ব কতটা। যদিও বর্তমানে উত্তেজনা কিছুটা কম, তবুও সম্ভাব্য হুমকি রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, MH-60R-এর মতো উন্নত হেলিকপ্টার ভবিষ্যতের সামুদ্রিক সংঘাতে নৌবাহিনীকে বড়সড় কৌশলগত সুবিধা দেবে।

নৌবাহিনীর অভিমত
INAS 335-এর কমান্ডিং অফিসার ক্যাপ্টেন ধীরেন্দ্র বিষ্ট জানান, এই হেলিকপ্টার প্রচলিত ও অসমমিত, সব ধরনের হুমকি মোকাবিলার জন্যই তৈরি। পাইলট ও কারিগরি কর্মীদের কথায়, গভীর ও অগভীর, দু’ধরনের জলেই শত্রু সাবমেরিন শনাক্ত ও নজরে রাখা যায়। তাই অনেকেই একে সমুদ্রে “শত্রুর দুঃস্বপ্ন” বলছেন।
 

POST A COMMENT
Advertisement