‘বিজেপি আর আরএসএসকে গুলিয়ে ফেললে ভুল হবে’, অবস্থান মোহন ভাগবতেরআরএসএস এর কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শ নেই। তাই বিজেপির মতাদর্শ দিয়ে আরএসএসকে বিচার করবেন না। বার্তা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ড. মোহন ভগবতের। সঙ্ঘের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ সভায় তিনি বলেন, কোনও রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে আরএসএসের জন্ম হয়নি। ভারতের সংস্কৃতি ও সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে ‘বিশ্বগুরু’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই সঙ্ঘের মূল উদ্দেশ্য।
মোহন ভগবত বলেন, অনেকেরই আরএসএস সম্পর্কে ভুল ধারণা আছে। তাই দেশের চারটি শহরে সঙ্ঘ নিজেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মানুষ যাতে সরাসরি সঙ্ঘের ভাবনা ও কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন তার জন্যই এই উদ্যোগ।
সঙ্ঘচালকের কথায়, 'ভারত মানে কোনও ভৌগোলিক সীমানা নয়। ভারত মানে একটি সংস্কৃতি। আরএসএস কোনও রাজনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলার উদ্দেশে তৈরি হয়নি। কোনও দল বা মতাদর্শের জন্যও নয়। হিন্দু সমাজের সার্বিক বিকাশই সঙ্ঘের লক্ষ্য।' আরএসএসকে বিজেপির সমার্থক ভাবা বা সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা একেবারেই ভুল, বলেন তিনি।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৮৫৭ র সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে নানা পর্যায়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। কোথাও অস্ত্র হাতে, কোথাও সত্যাগ্রহের পথে। কেউ জেলে গিয়েছেন, কেউ চরকা কেটেছেন। আবার একটি ধারার মতে, সমাজ সংস্কার ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন। রাজা রামমোহন রায় সেই ধারার প্রতিনিধি ছিলেন। অন্য দিকে স্বামী বিবেকানন্দ ও স্বামী দয়ানন্দ সমাজের শিকড়ে, অর্থাৎ প্রাচীন রীতি সংস্কৃতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। এই সবই সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা হিসাবে দেখা যেতে পারে।
তাঁর কথায়, 'সঙ্ঘের উদ্দেশ্য সেই ভাবনাকেই বাস্তবায়িত করা। কোনও কিছু ধ্বংস করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা বা কারও থেকে সুবিধা নেওয়াও সঙ্ঘের কাজ নয়।' বলেন, সঙ্ঘকে শুধুমাত্র একটি সেবামূলক সংগঠন বা বিজেপির সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখাও ভুল।
সব মিলিয়ে, মোহন ভাগবতের বক্তব্যের সারমর্ম করলে এটাই দাঁড়ায় যে, বিজেপি ও আরএসএস এক নয়। রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে তাদের ভূমিকা আলাদা, বলছেন সঙ্ঘ প্রধান।