
ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সে লাগাতার হয়রানি চলছে যাত্রীদের। তারইমধ্যে প্রশাসন ও সরকারি দফতরগুলিকে আরও মানবিক, বাস্তবসম্মত ও জনমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়ার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার এনডিএ সাংসদদের বৈঠকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিয়মকানুন মানুষের ওপর বোঝা হয়ে উঠতে পারে না। বরং তাদের জীবনকে সহজ করতেই আইন তৈরি হয়।
সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বার্তা দিয়েছেন, 'কোনও আইন বা নিয়ম এমন হওয়া চলবে না, যা সাধারণ মানুষকে অযথা সমস্যায় ফেলে। নিয়ম তৈরি হবে ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য, মানুষের জীবন বিপর্যস্ত করার জন্য নয়।'
পরিকল্পনার অভাব
গত এক সপ্তাহ ধরে ইন্ডিগো ভুগছে চরম বিশৃঙ্খলায়। পাইলটদের উড়ান ঘণ্টা সীমিত করার নতুন নির্দেশ কার্যকর করতে গিয়ে পরিকল্পনার ঘাটতি ও জনবল সংকটের কারণে, শয়ে শয়ে ফ্লাইট বাতিল কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরি। দেশজুড়ে হাজার হাজার যাত্রীর আটকে পড়া। বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে জনরোষ ও সমালোচনার ঝড় এই পরিস্থিতিতে ডিজিসিএ ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স এবং সিওও ইসিদ্রে পোরকেরাসকে শো-কজ নোটিশ পাঠিয়েছে।
সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। আজ, মঙ্গলবারই ডাকা হয়েছে উচ্চস্তরের বৈঠক, যেখানে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক, ডিজিসিএ ও বিমানসংস্থাগুলির শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে ডিজিসিএর কঠোর নির্দেশ
নিয়ন্ত্রক সংস্থার অভিযোগ, ইন্ডিগো পর্যাপ্ত সক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও পুরোনো সময়সূচী বজায় রেখেছে। তাই ডিজিসিএর নির্দেশ, মোট ফ্লাইট সময়সূচী ৫% কমাতে হবে। উচ্চ-চাহিদার রুটগুলোতে বিশেষ নজরদারি। একক-সেক্টর উড়ানের ক্ষেত্রেও সতর্কতা। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে সংশোধিত সময়সূচী জমা দেওয়ার নির্দেশ, ডিজিসিএর বক্তব্য, ইন্ডিগো নিজের তালিকা কার্যকরভাবে পরিচালনা করার সামর্থ্য দেখাতে পারেনি।
কেন প্রধানমন্ত্রীর বার্তা গুরুত্বপূর্ণ?
ইন্ডিগো-সংকটের মতো পরিস্থিতি যেন অন্য খাতেও না তৈরি হয়, সে কারণেই মোদীর বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, আকস্মিক নিয়ম বদলে মানুষের ভোগান্তি বাড়ানো যাবে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা থাকা জরুরি। প্রশাসনের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষের সুবিধা, শিল্পের স্থিতিশীলতা ও সুশৃঙ্খল পরিষেবা নিশ্চিত করা। সর্বোপরি, প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, নিয়ম-কানুন মানুষের জীবনকে সহজ করবে, কঠিন নয়।