পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অশান্তির আবহে মঙ্গলবারই সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরও একধাপ এগিয়ে এবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডকে ঢেলে সাজাল কেন্দ্র। এই বোর্ডের মাথায় আনা হয়েছে প্রাক্তন RAW প্রধান অলোক জোশীকে। এই বোর্ডের কাজ হল, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়া। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপ করতে বলা। পহেলগাঁও হামলার পর এই বোর্ড ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নমো। সেই ইঙ্গিতই দিলেন তিনি।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এই বোর্ডে এ বার থেকে থাকবেন ৬ সদস্য। এর মধ্যে ৩ জন সামরিক বাহিনী থেকে, ২ জন IPS এবং ১ জন IFS। সামরিক বাহিনী থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাদার্ন আর্মি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল একে সিং, প্রাক্তন ওয়েস্টার্ন কমান্ডার এয়ার মার্শাল পিএম সিনহা এবং রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্নাকে। এ ছাড়াও বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত IPS রাজীব রঞ্জন বর্মা এবং মনমোহন সিংকে। অবসরপ্রাপ্ত IFS বি বেঙ্কটেশ বর্মাও রয়েছেন ৬ সদস্যের টিমে।
প্রথমবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাজে জমা করে এই বোর্ড। কীভাবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ করা যাবে, তা নিয়েও নানা সমাধান এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন বোর্ডের সদস্যরা।
শেষবার এই বোর্ড গঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালে। বোর্ডের নেতৃত্বে ছিলেন রাশিয়ায় নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পিএস রাঘবন। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে পর্যটকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় লস্কর মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনে সদস্যরা। ভূস্বর্গের বৈসরণ উপত্যকা কেঁপে ওঠে জঙ্গিদের গুলিতে। ঝাঁঝরা হয়ে যান একাধিক পর্যটক। মৃত্যু হয় ২৬ জনের। এই ঘটনার পর থেকেই ভারত-পাক সীমান্ত এলাকায় অশান্তির আবহ। কূটনৈতিক সম্পর্কে তলানিতে ঠেকেছে দুই দেশের। ২৬ জনের মৃত্যুর বদলার দাবি তুলেছে সমগ্র দেশবাসী। ঠিক সেই সময় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ড ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।