Sikkim Road Closed: সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বারবার ধসে বিপর্যস্ত হয়েছে গত কয়েক সপ্তাহে। একবার ধস সরিয়ে খোলা হয় তো আরেক জায়গায় ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে এতদিন সিকিম যাওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে বিকল্প পথের সন্ধান দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু জুনের শেষ দিকে ফের নতুন করে রাস্তা ধসে গিয়েছিল। ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিপাকে পড়তে হয় সিকিমগামী সমস্ত গাড়িকে।
১৯ দিন বন্ধ থাকার পরে অবশেষে খুলতে চলেছে বাংলা সিকিম লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। নতুন করে ধস না নামলে বা প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে দুই একদিনের মধ্যেই ১০নম্বর জাতীয় সড়ক খুলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ত দফতরের সম্ভাবনাময় আশ্বাস মেলায় পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলের মধ্যেই অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাংলা-সিকিম লাইফ লাইন ১০নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রবল বর্ষণে ১০নম্বর জাতীয় সড়কের সেলফিদারায় ধসে জাতীয় সড়কের একটা বড় অংশ তিস্তা গর্ভে তলিয়ে যায়। সেখানে পাহাড়ের গা কেটে নতুন করে রাস্তা সম্প্রসারণ করার কাজ চলছিলো। উদ্বেগ কাটিয়ে পরিস্থিতির স্বাভাবিক হতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছিলো জেলা প্রশাসন সূত্রে। আর সেই সেলফিদারাতে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে ওই রাস্তায় যান চলাচল করানো হয়েছে পূর্ত দফতরের পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষ থেকে। পণ্যবাহী লরির পাশাপাশি ছোট গাড়ি চলাচল করানো হয়। অফিসিয়ালি নোটিফিকেশন জারি না হলেও, প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে প্রতিকূল পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে আগামী এক দুইদিনের মধ্যেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক হবার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত সার্ভের মাধ্যমে অফিসিয়ালি নোটিফিকেশন জারি করার বিষয়ে আশাবাদী পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররাও। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে কালিম্পঙ জেলা প্রশাসন।
১০ নম্বর জাতীয় সড়ক খুলে গেলে ফেলে শিলিগুড়ি থেকে সেবক হয়ে কালিঝোরা, শ্বেতীঝোরা, সেলফিধারা, বিরিকধারা হয়ে সোজা রম্ভি হয়ে যানবাহন পৌঁছাবে তিস্তাবাজারে। এরপর মেল্লি হয়ে রঙপো সীমানা পেরিয়ে গ্যাঙটকে। এই সময়কালে শিলিগুড়ি, কালিম্পঙ ও সিকিমের মধ্যে সমস্ত ধরনের যানবাহন চলছিলো ঘুরপথে। অবিরাম বৃষ্টিতে ঘুরপথেও ঝূঁকিপূর্ন চলাচল ছিলো। কখনও বা একমুখী যান চলছে। এই কয়েকদিনে জোর কদমে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ চলেছে। জাতীয় সড়কের জায়গায় জায়গায় ধস সরানোর কাজ প্রায় শেষে দিকে।
লাইফ লাইন বন্ধ থাকায় ঘুরপথে পাঁচ থেকে সাত ঘন্টা বেশী সময় নিয়ে ও দ্বিগুন তিনগুন ভাড়া গুনে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছিলেন সকলেই। ১০নম্বর জাতীয় সড়ক চালু হলে সব দিক থেকেই ঝক্কি কমে যাবে। একদিকে সময় যেমন কম লাগবে, তেমনি দূর্ভোগ কমবে নিত্যযাত্রী সহ পর্যটকদের।
অন্যদিকে উত্তর সিকিমে বৃষ্টি পরিস্থিতির এখনও উন্নতি হয়নি। উত্তর সিকিমে প্রবল লাগাতার বৃষ্টিতে ফের ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে তিস্তা। তিস্তা নদী জলস্ফীত হয়ে ফুঁসছে। বৃহস্পতিবারও কালিম্পঙ ও দার্জিলিঙের সংযোগকারী তিস্তাবাজার, পেশক, লামাহাটা, ঘুম, জোরবাংলো রোডে জল দাঁড়িয়ে পড়েছে। কালিম্পঙ জেলা প্রশাসনের তরফে এই রাস্তায় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি রাখা হয়েছে। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই কিছু ছোট বড় গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে চলছে। যদিও গত কয়েকদিনে বৃষ্টির দাপট অনেকটাই কমেছে দার্জিলিঙ পার্বত্য অঞ্চল, কার্শিয়াঙ, কালিম্পঙ ও পাহাড়ি এলাকায়। কিন্তু উত্তর সিকিমে টানা বৃষ্টি চলছেই। আর প্রবল বৃষ্টিতেই পাহাড়ি তিস্তা নদী খরস্রোতা হয়ে উঠেছে। তিস্তার জল উপছে পড়েছে রাস্তার ওপর।