আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেও সিকিমের অবস্থা এখনও তথৈবচ। বৃহস্পতিবার রাতে ফের ধস নামে উত্তর সিকিমের থেং এলেকার হাসপাতালের কাছে। একাধিক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেছি। এখনও উত্তর সিকিমের নানা পর্যটন স্থলে আটকে রয়েছে বহু মানুষ। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা। আপাতত বন্ধ রয়েছে লাচেন ও লাচুংয়ের পর্যটন পারমিট ইস্যু।
ছাতেন এলাকাতেও মূলত আটকে পড়েছেন পর্যটকরা। MI 41 এবং MI 39 হেলিকপ্টার প্যাংগং বিমানবন্দর থেকে ছাতেনে পৌঁছয়। পর্যটন ও অসামরিক পরিবহণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব সিএস রাও বলেন, 'উত্তর সিকিমেপ চুংথাং এলাকা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। লাচেন এবং লাচেন যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কোনও পারমিট আমরা এখন দিচ্ছি না। তবে সিকিমে আরও ২০০টি পর্যটন স্থল রয়েছে। ফলে সেগুলিতে অনায়াসেই যেতে পারেন ট্যুরিস্টরা।'
পর্যটক কমেছে, সেকথা মানছেন পর্যটন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব। শুক্রবার সকালে লাচুং থেকে ৬৫ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনও ৬৩ জন লাচুংয়ে আটকে রয়েছেন বলে জানান সিএস রাও। শনিবার তাঁদের উদ্ধার করা হবে। শনিবার দুপুরের মধ্যে সমস্ত উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গনের পুলিশ সুপার সোনম ভুটিয়া বলেন, ‘এ দিন সমস্ত পর্যটককেই ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ায় ৬৩ জন এখনও আটকে রয়েছেন।'
উত্তর সিকিমে এমন প্রতিকূল আবহাওয়া দেখা গিয়েছিল গত বছর। তবে উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, সেবার অতি বৃষ্টির জেরে ধসে রাস্তা বেহাল হয়ে পড়লেও হেলিকপ্টারে পর্যটকদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু এবার প্রতিদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে পড়ছে। বৃষ্টিভরা মেঘ এবং কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে চতুর্দিক। ফলে উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, ধসের জেরে ছাতেন থেকে চুংথাংয়ে পর্যটকদের হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়ায় কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধসের জেরে রাস্তা ভেঙেছে। তার চেয়েও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নতুন নতুন ঝর্নার সৃষ্টি। তীব্র গতিতে ঝর্নার জল রাস্তায় এসে আছড়ে পড়ছে। ফলে ওই এলাকাগুলি অতিক্রম করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিকিম পুলিশের পক্ষ থেকে মঙ্গন থেকে লাচেন পর্যন্ত হেলিকপ্টারে তিস্তা নদী ও রাস্তার ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। ওই ছবি দেখে আধিকারিকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। যেভাবে রাস্তায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে মেরামত করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। রাস্তার পাশাপাশি বেশ কিছু পাহাড়ি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সমস্ত এলাকায় খাবারের সঙ্কট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।