এখন আর বিষয়টি উপেক্ষা করলে চলবে না, মত তাঁর।ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে সম্প্রতি উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা। এই আবহেই রবিবার বেঙ্গালুরুতে ‘চিকেনস নেক’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন আধ্যাত্মিক নেতা সদগুরু। তাঁর কথায়, শিলিগুড়ি করিডর আদতে ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ফল। একটি ‘স্ট্রাটেজিক ভুল ’, যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ই সংশোধন করা উচিত ছিল। এখন আর বিষয়টি উপেক্ষা করলে চলবে না, মত তাঁর।
রবিবার এই মন্তব্যের ভিডিও শেয়ার করে এক্স-এ সদগুরু লেখেন, 'Siliguri Corridor is a 78-year-old anomaly created by Bharat’s Partition, which should have been corrected in 1971… It is time to nourish the chicken and allow it to evolve into an elephant.' অর্থাৎ, ‘চিকেন’কে লালন করে ‘হাতি’ বানানোর সময় এসেছে। রূপকের আড়ালে বার্তাটি স্পষ্ট; ভারতের এই গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ডকে আর কৌশলগত ভাবে দুর্বল অবস্থায় রাখা চলবে না।
শিলিগুড়ি করিডরই ‘Chicken’s Neck’ নামে পরিচিত। উত্তরবঙ্গের একটি সংকীর্ণ ভূমিখণ্ড। এক দিকে নেপাল ও ভুটান, অন্য দিকে বাংলাদেশ; এই তিন দেশের মাঝখানে মাত্র ২২ কিলোমিটার চওড়া এই করিডরই ভারতের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের একমাত্র স্থলসংযোগ। বেসামরিক যাতায়াত, পণ্য পরিবহণ থেকে শুরু করে সেনা চলাচল; সব কিছুর জন্যই এই পথ অপরিহার্য। ফলে নিরাপত্তার দিক থেকে এর গুরুত্ব প্রশ্নাতীত।
সদগুরুর মন্তব্যের সূত্রপাত বাংলাদেশ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে। প্রশ্নকর্তা বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শিলিগুড়ি করিডর ‘কেটে দেওয়ার’ হুমকি দিয়েছে। যদিও মহম্মদ ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে সরকারিভাবে এমন কোনও হুমকির নথি নেই। তবে বাংলাদেশের কয়েক জন কট্টরপন্থী রাজনৈতিক নেতার বক্তব্যে উত্তর-পূর্ব ভারত ও শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে আগ্রাসী সুর শোনা গিয়েছে। সদগুরু এই ধরনের মন্তব্যকে ‘ভীষণ বোকামি’ বলে আখ্যা দিলেও বলেন, এর ফলে একটি বিষয় অন্তত প্রকাশ্যে এসেছে, যা এত দিন নীরবে জানা থাকলেও খোলাখুলি আলোচিত হচ্ছিল না। এমনকি, তাঁর মতে, এই আলোচনা এখন ‘তৃতীয় দেশ’-এর কাছেও গুরুত্ব পাচ্ছে।
সদগুরু বলেন, 'A nation cannot afford to leave such a critical vulnerability unresolved and hope that nobody will exploit it.' অর্থাৎ, এত বড় কৌশলগত দুর্বলতা জেনেও চোখ বুজে থাকা কোনও রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়। যদিও ‘চিকেন’কে ‘এলিফ্যান্ট’ বানানোর বাস্তব রূপরেখা তিনি দেননি।
বিশেষ ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ তাঁর ১৯৭১ সালের প্রসঙ্গ টানা। সদগুরুর মতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর ভারত এমন এক অবস্থানে ছিল, যখন এই ভৌগোলিক অস্বাভাবিকতা সংশোধনের সুযোগ ও ক্ষমতা দু’টিই ছিল। কিন্তু সেই মুহূর্ত হাতছাড়া করা হয়েছে। দেশভাগ যে একাধিক অযৌক্তিক সীমারেখা তৈরি করেছিল, শিলিগুড়ি করিডর তারই অন্যতম উদাহরণ; এমনটাই বক্তব্য তাঁর।