অজানা রোগে শিশুদের কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া জেলার পরাসিয়া অঞ্চলে। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে শুরু হচ্ছে উপসর্গ। যা ক্রমশ শিশুদের কিডনি বিকল করে তুলছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কাফ সিরাপ খাওয়ার পর থেকেই এই ধরনের উপসর্গ দেখা গিয়েছে পরাসিয়া এলাকার শিশুদের মধ্যে।
অগাস্ট মাস থেকে পরাসিয়া এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ভাইরাল জ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়তে শুরু করে। পরাসিয়া সরকারি হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয় বেশ কয়েক জন। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম মৃত্যু হয়। ওই শিশুকে নাগপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। চিকিৎসকরা কিডনি বিকল হওয়াকেই মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন। পরবর্তী ক'দিনে আরও মৃত্যু হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৬ শিশু মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে।
পরিস্থিতি বেগতিক হওয়ায় তৎপরতা দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন স্তরে। প্রধান স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা আধিকারিক (CMOH) ডা: নরেশ গোন্নাডে বলেন, 'এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মানুষের রক্ত, লিভার ও কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো হয়েছে। তবে কোনও নির্দিষ্ট রোগ চিহ্নিত করা যায়নি। ইতিমধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় স্তরের বিশেষজ্ঞ দল নমুনা সংগ্রহ করেছে, যার রিপোর্ট এখনও আসেনি। জেলা হাসপাতালে ভর্তি ৫ শিশুকে চিকিৎসার পর ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।'
জেলা কালেক্টর শীলেন্দ্র সিং স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করে চিকিৎসায় কোনও প্রকার গাফিলতি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজনে শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তিনি অভিভাবকদের সতর্ক করে বলেছেন, কোনও অবস্থায় ভুয়ো ডাক্তার বা অযোগ্য চিকিৎসকের হাতে যেন শিশুদের চিকিৎসার ভার না দেওয়া হয়।
তবে সন্দেহ তৈরি হয়েছে শিশুদের দেওয়া Coldrif এবং Nextro-DS সিরাপের ব্যবহারে। এই সিরাপগুলি অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেডিকেল স্টোরগুলোকেও বলা হয়েছে যেন কোনও ধরণের কম্বিনেশন সিরাপ না দেওয়া হয়, কেবল সাধারণ সিরাপই সরবরাহ করা হয়। তবে কি কাফ সিরাপ খেয়েই বিকল হচ্ছে একের পর এক শিশুর কিডনি? প্রশ্ন উঠছে সন্তানহারাদের মধ্যে।
সরকার শিশুদের জ্বরের চিকিৎসা নিয়ে বিশেষ প্রোটোকল জারি করেছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও শিশুর যদি দু'দিনের বেশি জ্বর থাকে, তবে অবিলম্বে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।