কী হবে এসএসসি-র ২৬ হাজার চাকরিজীবীর ভবিষ্যৎ? পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবে, নাকি শনাক্ত হবে বৈধ-অবৈধ চাকরি? তা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে সকাল সাড়ে দশটা থেকে এসএসসি মামলার শুনানি শুরু হয়। সেই শুনানি চলাকালীন অতিরিক্ত শূন্যপদ এবং ওএমআর শিট নিয়ে প্রধান বিচারপতির একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য এবং সিবিআইকে।
এদিন সুপ্রিম তোপের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সবথেকে গুরুত্ব দিয়ে যেটা দেখা হয়েছে সেটা হল যোগ ও অযোগ্যকে আলাদা করা সম্ভব কি না। এদিকে শুনানিতে এসএসসির ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটাকে নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। এদিন শুনানির প্রথমেই রাজ্যর অবস্থান জানতে চান প্রধান বিচারপতি। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালত মূলত যোগ্য এবং অযোগ্য চাকরিপ্রাপকদের বাছাই করার উপরে জোর দিয়েছে। সম্ভাব্য কোন উপায়ে তা করা যায়, সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে। তবে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা না-গেলে পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি বলেন, “যোগ্য অযোগ্য বাছাই করা না গেলে পুরো প্যানেল বাতিল বাতিল করতে হবে।”
মামলার শুনানিতে এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, "নম্বরে কারচুপির বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার নম্বরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।" এক্ষেত্রে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করে বাছাই করতে রাজ্য সরকারের সম্মতি রয়েছে কিনা তা জানতে চান প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের আইনজীবী এই প্রসঙ্গে জানান যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করার ক্ষেত্রে তাঁদেরও সমর্থন রয়েছে। মামলার শুনানিতে এসএসসি তরফে তাঁদের আইনজীবী আদালতে জানান, কারা যোগ্য এবং কারা অযোগ্য এটা আলাদা করে চিহ্নিত করা সম্ভব। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির তরফে আইনজীবী জয়দীপ ঘোষ জানিয়েছেন, কারা যোগ্য কারা অযোগ্য এটা পৃথকীকরণ করা সম্ভব। তবে এতদিন কেন এই কাজটি হল না সে ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এদিন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি ও ওএমআর শিট নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান, অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি ও ওএমআর শিট নিয়ে। তিনি জানতে চান, ‘ওএমআর শিট কবে নষ্ট করে দেওয়া যায় তার কোনও নিয়ম আছে? ওএমআর শিটের মিরর ইমেজ কি এসএসসি সংরক্ষণ করেছিল? এসএসসি-র কি উচিত ছিল না মিরর ইমেজ রেখে দেওয়া? কারণ এ ক্ষেত্রে আসল নথি হচ্ছে ওএমআর। ওএমআর শিট পরে ভর্তি করা হয়ে থাকে বা পরিচয় গোপন করা হয়ে থাকলে, সেটা ওএমআর থেকেই দেখা যেত।' ওএমআর শিট নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাও। তিনিও বলেন, ‘আমার তো চিন্তা হচ্ছে ফাঁকা ওএমআর শিট বদলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।’ প্রধান বিচারপতি এও বলেন- ‘জানি না ডাল মে কালা হ্যায় ইয়া সব কুছ হি কালা হ্যায়’। এ বিষয়ে রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, ওএমআর শিট এক বছর পরে নষ্ট করে দেওয়া যায়, সেই নিয়ম আছে। তবে ওএমআর শিট এর কোনও মিরর ইমেজ সংরক্ষণ করা হয়নি।’