দিল্লি-এনসিআর-এ বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা ও তাদের কামড়ে বাড়তে থাকা জলাতঙ্কে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এটিকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ সমস্যা বলে চিহ্নিত করে রাজধানী ও আশপাশের রাজ্য সরকারকে আট সপ্তাহের মধ্যে সব কুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে নির্বীজন ও টিকাকরণের নির্দেশ দিয়েছে।
সমস্যার ভয়াবহতা
২০২৪ সালেই সারা দেশে নথিভুক্ত হয়েছে ৩৭ লক্ষেরও বেশি কুকুরের কামড়ের ঘটনা, যার মধ্যে প্রায় ৫.১৯ লক্ষ ভুক্তভোগী শিশু (১৫ বছরের কম বয়সী)। দিল্লিতে প্রতিদিন গড়ে ২,০০০ কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটছে। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রেকর্ড হয়েছে ৩৫,১৯৮টি পশুর কামড়ের ঘটনা।
জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যাও চিন্তার কারণ—২০২৪ সালে দিল্লিতে সন্দেহভাজন মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের, যা ২০২৩ সালের তুলনায় বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে জলাতঙ্কে মৃত্যুর ৩৬% ভারতে ঘটে।
প্রশাসনের ব্যর্থতা
পশু জন্ম নিয়ন্ত্রণ (ABC) নিয়ম ২০২৩ অনুযায়ী নির্বীজন ও টিকাকরণের পরিকল্পনা থাকলেও দিল্লির প্রায় ১০ লক্ষ পথকুকুরের অর্ধেকেরও কমকে নির্বীজিত করা হয়েছে। ফলে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। ২০২৩ সালের তুলনায় দিল্লিতে কুকুরের কামড়ের ঘটনা বেড়েছে ১৪৩%।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
আট সপ্তাহের মধ্যে দিল্লি-এনসিআর-এর সব বেওয়ারিশ কুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর।
নির্বীজন ও টিকাকরণের পর কুকুরগুলিকে রাস্তায় না ছাড়ার নির্দেশ।
এক সপ্তাহের মধ্যে কুকুরের কামড় সংক্রান্ত অভিযোগের জন্য হেল্পলাইন চালু।
আশ্রয় প্রক্রিয়ায় বাধা দিলে অবমাননার ব্যবস্থা।
ভ্যাকসিন মজুদ ও চিকিৎসা সম্পর্কিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ।
৫,০০০ কুকুর ধারণক্ষমতা সম্পন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ।
সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপে সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রাণীপ্রেমীরা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও অনেকে মনে করছেন, মানুষের নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এই ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।