Supreme Court DA Case: 'রুল মানতে হবে', DA মামলার চতুর্থ দিনেও রাজ্যকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

বৃহস্পতিবারও ডিএ মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে। এদিন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী রউফ রহিমও অভিযোগ করেন, কোনও সুনির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই রাজ্য সরকার ইচ্ছামতো ডিএ দিচ্ছে। তা ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে যে হারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্যই বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্য বলতে পারে না যে তারা বেতন কমিশনের সুপারিশ মানবে না। তা হলে কোন নীতিতে, কিসের ভিত্তিতে তারা ডিএ দিচ্ছে।

Advertisement
'রুল মানতে হবে', DA মামলার চতুর্থ দিনেও রাজ্যকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টেরSupreme Court
হাইলাইটস
  • বৃহস্পতিবারও ডিএ মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে।

বৃহস্পতিবারও ডিএ  মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে। এদিন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী রউফ রহিমও অভিযোগ করেন, কোনও সুনির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই রাজ্য সরকার ইচ্ছামতো ডিএ দিচ্ছে। তা ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কারণে যে হারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্যই বর্ধিত হারে ডিএ দেওয়া প্রয়োজন। রাজ্য বলতে পারে না যে তারা বেতন কমিশনের সুপারিশ মানবে না। তা হলে কোন নীতিতে, কিসের ভিত্তিতে তারা ডিএ দিচ্ছে।  এ বিষয়ে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রর বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য সরকার নিজেই বিভ্রান্তি তৈরি করে তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।  সেইসঙ্গে  সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, রাজ্যই বলেছিল তারা রোপার ভিত্তিতে ডিএ দেবে। বলা হয়েছিল বকেয়া ডিএ-ও দেওয়া হবে। রাজ্যকে আইন মানতে হবে। আগামী মঙ্গলবার ডিএ  মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

এর আগে বকেয়া ডিএ-র অন্তত ২৫ শতাংশ মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ সরকার মানেনি। এই আবহে  সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্যকে তার নিজের তৈরি বিধি মানতে হবে। রাজ্যের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান বৃহস্পতিবার আদালতে বলেন, ‘বিষয়টি সাংবিধানিক। রাজ্য সরকার তার অধিকার বলে সরকারি কর্মীদের চাকরির শর্ত তৈরি করবে। এটাই মৌলিক প্রিন্সিপাল। রাজ্য সরকার ডিএ দিচ্ছে না, এমন অভিযোগ মিথ্যা। এই ধারণা রাখাও উচিত নয়।’ তা শুনে বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেন, ‘আমরা কোনও ধারণা তৈরি করিনি। আপনি বলেছিলেন রোপার ভিত্তিতে ডিএ দেওয়া হবে। আপনিই বলেছিলেন বকেয়া ডিএ-ও দেওয়া হবে। আপনাকে রুল মানতে হবে।’

এদিন মামলার শুরুতেই প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। কোনও সুনির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই রাজ্য সরকার তাদের খেয়াল খুশি মতো ডিএ দিচ্ছে, আদালতে অভিযোগ করেন সরকারি কর্মীদের তরফে সওয়াল করা আইনজীবী রউফ রহিম। এদিন বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের পর্যবেক্ষণ, ‘কর্মীদের আর্থিক অবস্থার কথা ভাবতে হবে৷ রাজ্য সরকার বিভ্রান্তি তৈরি করে তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এরা নিজেরাই সমস্যা তৈরি করেছে, সেই সমস্যার সুবিধে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।’ ডিভিশন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি সঞ্জয় কারোল বলেন, ‘মাথায় রাখতে হবে এটা কোনও আর্থিক ইমার্জেন্সি নয়৷’

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান এদিন পাল্টা সওয়াল করেন, সরকার ডিএ দেওয়ার আগে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। বাজেটের বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আর রাজ্যের নীতি আলাদা। যে হেতু এ ক্ষেত্রে রাজ্য জড়িত, ফলে রাজ্যের কর্মচারীদের কিসের ভিত্তিতে ডিএ দেওয়া হবে, তা রাজ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কেন্দ্রীয় হারেই ডিএ দিতে হবে, এটা বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্যের আইনজীবীর আরও দাবি, রাজ্যের স্মারকলিপিতে স্পষ্ট বলা রয়েছে যে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ বাড়ানো হবে। রোপা আইন বা ‘রোপা রুল’-এও কোথাও বলা নেই যে, আলাদা সূচক তৈরি করে ডিএ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের আর্থিক নীতির উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার স্বাধীনতা রয়েছে রাজ্য সরকারের। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করে , রাজ্যই বলেছিল তারা রোপার ভিত্তিতে ডিএ দেবে। বলা হয়েছিল বকেয়া ডিএ-ও দেওয়া হবে। রাজ্যকে আইন মানতে হবে।

প্রসঙ্গত, বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ)-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে রাজ্যকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ জন্য ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য টাকা দিতে পারেনি। বরং আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে সোমবার থেকে প্রতি দিনই শুনানি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্য আগে জানিয়েছিল, লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটাতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। অন্য দিকে, রাজ্যের আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটেও এমন কোনও বরাদ্দ নেই। তাই এখনই বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মেটানো সম্ভব নয়। এ জন্য আরও সময়ের প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানিয়েছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। 

বুধবার মামলাকারী সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে সওয়াল করা আইনজীবীরা  ডিএ দেওয়া নিয়ে রাজ্যের অনিচ্ছার কথা জানান। আইনজীবীদের সওয়াল ছিল, ‘এখন ডিএ দেওয়ার কথা বলছেই না রাজ্য। নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দিতে হয়। এটা সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে। কিন্তু বকেয়া ডিএ দিতে চায় না সরকার।’ কিস্তিতে বকেয়া ডিএ মেটানোর পরামর্শও দেওয়া হয়। এর পরেই চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। উঠে আসে সুদের কারবারিদের প্রসঙ্গ। মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি মিশ্রের পর্যবেক্ষণ, ‘মেথড একই। এরা পুরোনো দিনের সুদের কারবারিদের মতো টাকা বাঁচিয়ে অন্য কাজে লাগাচ্ছে।’

POST A COMMENT
Advertisement