ভাতা রাজনীতি নিয়ে অসন্তোষপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এভাবে নির্বাচনের আগে বিনামূল্যে সব কিছু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে মানুষ তো কাজ করতেই চাইবে না। কারণ তাঁরা বিনামূল্যে রেশন আর হাতে টাকা পেয়ে যাচ্ছে।
শহরাঞ্চলে গৃহহীনদের থাকার অধিকার সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি বিআর গাভাই এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ। সেই শুনানিতে বিচারপতি গাভাইয়ের অভিমত,'দুর্ভাগ্যবশত, বিনামূল্যের প্রকল্পের কারণে মানুষ কাজ করতে চাইছে না। তারা বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছে। কোনও কাজ না করেই টাকা পাচ্ছে।
মামলাকারীকে বেঞ্চ জানায়,'গৃহহীন মানুষের প্রতি আপনার উদ্বেগ প্রশংসনীয়। কিন্তু এই মানুষদের সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া হলে কি ভালো হবে না?'
কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানি বেঞ্চকে জানান, শহরাঞ্চলে দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রক্রিয়া আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে গৃহহীনদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে'।
কতদিনের মধ্যে এই প্রকল্প আনা সম্ভব, তা জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। এরপর মামলার শুনানি ৬ সপ্তাহের স্থগিত রাখে আদালত।
দেশের গরিবদের বিনামূল্যের রেশন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কোভিডের সময় থেকে চালু রয়েছে এই প্রকল্প। এছাড়া বিভিন্ন রাজ্যে মাসে মাসে টাকা দেওয়ার প্রকল্প চালু রয়েছে। বাংলাতেই রয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। এই প্রকল্পে মহিলারা মাসে মাসে নগদ ১০০০ এবং ১২০০ টাকা করে পান। এছাড়া অন্যান্য রাজ্যেও মহিলাদের টাকা দেওয়ার প্রকল্প চালু হয়ে গিয়েছে। সদ্য দিল্লিতেই মহিলাদের মাসে টাকা দেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। কেজরিওয়ালের আপ মাসে মাসে ২১০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেখানে ২৫০০ টাকা মাসে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। এছাড়া দিল্লিতে আপ সরকার বিদ্যুৎবিলেও ছাড় দিত।
একটা সময় বিজেপি 'রেউডি' রাজনীতি বলে কটাক্ষ করত। এখন তারাও এই ভাতার রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, মানুষকে সব বিনামূল্যে দিয়ে দেশের কতটা লাভ হচ্ছে? এতে তো পরিকাঠামোয় খরচ কমছে। চাপ বাড়ছে রাজকোষের উপর। দীর্ঘকালীন ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতির জন্য এটা বিপজ্জনক।