Supreme Court on Influencers: সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কটাক্ষ, রসিকতা। সেই সঙ্গে অশ্লীল মস্করা। সোমবার পাঁচ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন 'ইন্ডিয়াস গট ল্যাটেন্ট' এর সময় রায়না, রণবীর আলহাবাদিয়াও। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বাকস্বাধীনতা মানেই এই নয় যে, যা খুশি বলা যাবে। তাও আবার স্রেফ আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার(কমার্শিয়াল) উদ্দেশ্যে। প্রতিবন্ধী, নারী, শিশু বা প্রবীণদের, কাউকেই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে অপমান করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, এই পাঁচ ইনফ্লুয়েন্সারকে তাঁদের ইউটিউব চ্যানেল ও পডকাস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। পাশাপাশি, হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে যে তাঁরা সেই নির্দেশ মানছেন।
পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তি ও জরিমানাও হতে পারে।
'হিউমার জীবনের অংশ'
বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, 'অধিকার আর দায়িত্ববোধের মধ্যে ভারসাম্য থাকাটা জরুরি।' আদালতের মন্তব্য, 'হিউমার জীবনের অংশ। আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে নিয়েও মজা করতে পারি। কিন্তু কেউ যদি অন্যকে ছোট করে, কোনও কমিউনিটির অনুভূতিতে আঘাত হেনে লোক হাসানোর চেষ্টা করে, তখন সেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।'
নতুন গাইডলাইন তৈরি
কেন্দ্রীয় সরকারকে আদালতের নির্দেশ, সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য নতুন গাইডলাইন তৈরি করতে হবে। যাতে প্রতিবন্ধী, নারী, শিশু ও প্রবীণদের অপমানের প্রবণতা বন্ধ করা যায়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সব পক্ষের মতামত নিয়েই যেন একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়।
এর আগে গত ১৫ জুলাইয়ের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানিকে আদালত বলেছিল, আর্টিকেল ১৯ এবং আর্টিকেল ২১ এর মধ্যে ব্যালেন্স রাখতে হবে। সেই সময় আদালত বলেছিল, 'যদি আর্টিকেল ১৯ আর ২১ এর মধ্যে প্রতিযোগিতা হয়, তবে আর্টিকেল ২১ জিতবে।'
বিচারপতি সূর্য কান্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেন, 'যা করছি তা ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই। এমন একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে যাতে কোনও ব্যক্তির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ না হয়।'
এনজিও কিউর এসএমএ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া এই মামলা দায়ের করেছিল। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কারও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে উপহাসের কোনও অধিকার নেই। এই ধরনের আচরণকে আদালত 'ক্ষতিকর' ও 'মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়ার মতো' বলেও অভিহিত করেছে।
রায়না ও আল্লাহবাদিয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্ক
সময় রায়না ছাড়াও এই কেসে জড়িয়ে পডকাস্টার রণবীর আল্লাহবাদিয়াও। মহারাষ্ট্র ও অসম পুলিশ ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্ট এর আগেই রণবীর আল্লাহবাদিয়াকে অন্তর্বর্তী সুরক্ষা প্রদান করেছিল। তবে আদালত এও উল্লেখ করেছিলেন যে, 'তাঁর মন্তব্য অশ্লীল এবং সমাজকে লজ্জায় ফেলেছে।'
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য় কঠোর মেসেজ সুপ্রিম কোর্টের
শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় কনটেন্ট তৈরি করা মানে তা কমার্শিয়াল উদ্দেশে পেশ করা। সেই বক্তব্যে কোনও সম্প্রদায়ের মানহানি বা অপমান মেনে নেওয়া হবে না। আইনের বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্টের ধরনে কিছুটা হলেও রাশ টানা হল। ভবিষ্যতে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বাকস্বাধীনতার সীমারেখাটিও নতুন করে এঁকে দিল সুপ্রিম কোর্ট।